রক্ত হলো প্রাণীদেহের একটি লাল বর্ণের, অস্বচ্ছ, লবণাক্ত এবং সামান্য ক্ষারধর্মী তরল যোজক টিস্যু। একজন পূর্ণবয়স্ক সুস্থ মানুষের দেহে প্রায় ৫–৬ লিটার রক্ত থাকে, যা শরীরের মোট ওজনের প্রায় ৮%। মানুষের রক্ত লোহিত রক্তকণিকার উপস্থিতির কারণে লাল রঙ ধারণ করে। রক্তের বিভিন্ন উপাদানের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলে বিভিন্ন রকমের অস্বাভাবিক অবস্থা সৃষ্টি হয়।
-
রক্তের অস্বাভাবিক অবস্থা:
১. অ্যানিমিয়া:
-
লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা বা হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় কমে গেলে অ্যানিমিয়া হয়।
২. থ্যালাসেমিয়া:
-
বংশগত রক্তের রোগ যা সাধারণত শিশু অবস্থায় শনাক্ত হয়।
-
হিমোগ্লোবিনের গঠনগত ত্রুটির কারণে লোহিত রক্তকণিকা ভেঙে যায়, ফলে রক্তশূন্যতা সৃষ্টি হয়।
-
রোগীকে প্রায় প্রতি ৩ মাস অন্তর রক্ত সঞ্চালন করতে হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে রক্তশূন্যতার হার কমতে পারে।
৩. লিউকেমিয়া:
-
শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা অত্যধিক হারে বৃদ্ধি (৫০,০০০–১,০০,০০০) পেলে একে লিউকেমিয়া বা ব্লাড ক্যান্সার বলা হয়।
৪. লিউকোসাইটোসিস:
-
শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা ২০,০০০–৩০,০০০ হলে লিউকোসাইটোসিস হয়।
-
নিউমোনিয়া, হুপিং কাশি ইত্যাদি রোগে এটি দেখা যেতে পারে।
৫. পলিসাইথেমিয়া:
-
লোহিত রক্তকণিকার সংখ্যা স্বাভাবিকের তুলনায় বৃদ্ধি পেলে একে পলিসাইথেমিয়া বলা হয়।
৬. থ্রম্বোসাইটোসিস:
-
অনুচক্রিকার সংখ্যা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে গেলে থ্রম্বোসাইটোসিস হয়।
-
রক্তনালির ভেতরে রক্ত জমাট বাঁধাকে থ্রম্বোসিস বলা হয়।
-
হৃৎপিণ্ডের করোনারি রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধলে করোনারি থ্রম্বোসিস, এবং মস্তিষ্কের রক্তনালিতে হলে সেরিব্রাল থ্রম্বোসিস হয়।
৭. পারপুরা:
-
অনুচক্রিকার সংখ্যা স্বাভাবিকের তুলনায় কমে গেলে পারপুরা হয়।
-
ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে এই অবস্থাটি দেখা দিতে পারে।