নিচের কোনটি বিশ শতকের পত্রিকা?
A
শনিবারের চিঠি
B
বঙ্গদর্শন
C
তত্ত্ববােধিনী
D
সংবাদ প্রভাকর
উত্তরের বিবরণ
শনিবারের চিঠি, বঙ্গদর্শন, তত্ত্ববোধিনী এবং সংবাদ প্রভাকর পত্রিকাগুলি বাংলা সাহিত্যে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে। এই পত্রিকাগুলোর প্রকাশনার সময়কাল, উদ্দেশ্য ও প্রভাব ভিন্ন হলেও প্রত্যেকটি তার সময়ের সাহিত্য-চর্চা ও সামাজিক জ্ঞানের উন্নয়নে বিশেষ অবদান রেখেছে।
-
শনিবারের চিঠি পত্রিকা: এটি একটি স্যাটায়ারধর্মী সাহিত্যিক পত্রিকা, যা প্রথমে সাপ্তাহিক পরে মাসিক প্রকাশিত হয়। প্রধান উদ্দেশ্য ছিল হাস্য কৌতুকের মাধ্যমে সমসাময়িক সাহিত্য-চর্চাকে সমালোচনা করা। প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২৪ সালে, এবং ১৯৩০-৪০-এর দশকে কলকাতা কেন্দ্রিক বাংলা সাহিত্যের জগতে বিশেষ আলোড়ন সৃষ্টি করে। পত্রিকার সঙ্গে কল্লোল গোষ্ঠীর দ্বন্দ থাকলেও এটি তৎকালীন সাহিত্যকে অনুপ্রাণিত করেছিল। পত্রিকার প্রাণপুরুষ ছিলেন সজনীকান্ত দাস, যিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পত্রিকার প্রকাশনা ও সম্পাদনার সাথে যুক্ত ছিলেন।
-
বঙ্গদর্শন পত্রিকা: এটি প্রথম প্রকাশ করেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৮৩৮-১৮৯৪) ১৮৭২ সালে। উনিশ শতকের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের, বিশেষত বাংলা গদ্যের গঠনে, এর অবদান গুরুত্বপূর্ণ। পত্রিকাটি মাত্র চার বছর, ১৮৭৬ পর্যন্ত, প্রকাশিত হয়।
-
তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা: ব্রাহ্মসমাজের তত্ত্ববোধিনী সভার মুখপত্র হিসেবে এটি ১৮৪৩ সালের ১৬ আগস্ট দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং অক্ষয়কুমার দত্তের সম্পাদনায় প্রকাশিত হয়। পত্রিকার সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
-
সংবাদ প্রভাকর পত্রিকা: প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত, যিনি ১৮৩১ সালে সাপ্তাহিক পত্রিকা হিসেবে এটি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৮৩৯ সাল থেকে এটি দৈনিক পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত হতে থাকে।
সারসংক্ষেপে দেখা যায়, শনিবারের চিঠি পত্রিকা বিশ শতকে প্রকাশিত হয়, যেখানে বঙ্গদর্শন, তত্ত্ববোধিনী এবং সংবাদ প্রভাকর উনিশ শতকের পত্রিকা।
0
Updated: 1 month ago
'আমার সন্তান যেন থাকে দুধেভাতে।'—এই মনােবাঞ্ছাটি কার?
Created: 1 month ago
A
ভবানন্দের
B
ভাঁড়ুদত্তের
C
ঈশ্বরী পাটুনীর
D
ফুল্লরার
“আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে” উক্তিটি ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের অন্নদামঙ্গল কাব্যের অমর প্রার্থনা, যা করে ঈশ্বরী পাটনী।
এই প্রার্থনাটি ঘটে যখন দেবী অন্নদা তার খেয়া নৌকায় নদী পার হয়ে বর চাইতে যান এবং ঈশ্বরী পাটনীকে অনুরোধ জানান।
-
অন্নদামঙ্গল কাব্যের রচয়িতা: ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর, আঠারো শতকের বাংলা সাহিত্যের একজন শ্রেষ্ঠ কবি।
-
কাব্যের রচনা: রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আদেশে রচিত।
-
অন্নদামঙ্গল কাব্যের তিনটি খণ্ড:
১. অন্নদামঙ্গল
২. বিদ্যাসুন্দর
৩. ভবানন্দ-মানসিংহ কাহিনী
0
Updated: 1 month ago
'সন্ধ্যাভাষা' কোন সাহিত্যকর্মের সঙ্গে যুক্ত?
Created: 2 months ago
A
চর্যাপদ
B
পদাবলি
C
মঙ্গলকাব্য
D
রোমান্সকাব্য
চর্যাপদ
-
চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন, যা “চর্যাগীতি” বা “চর্যাগীতিকোষ” নামেও পরিচিত।
-
এটি বাংলা ভাষার প্রথম কাব্যসংকলন বা গানের সংকলন।
-
চর্যাপদের মূল বিষয়বস্তু বৌদ্ধধর্ম অনুযায়ী সাধনা ও ভজনের তত্ত্ব।
-
চর্যাপদে বৌদ্ধ সহজিয়াগণ রচনা করেছেন।
-
১৯০৭ সালে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রয়েল লাইব্রেরি থেকে এটি আবিষ্কার করেন।
-
চর্যাপদের ভাষাকে বলা হয় ‘সন্ধ্যা’ বা ‘সান্ধ্য ভাষা’, যা কখনও স্পষ্ট এবং কখনও অস্পষ্ট; তাই একে ‘আলো-আঁধারি ভাষা’ বলাও হয়।
-
প্রাচীন ছন্দে রচিত চর্যাপদের পদগুলোর আধুনিক বিশ্লেষণে মাত্রাবৃত্ত ছন্দ ধরা হয়েছে।
চর্যাপদ বিষয়ে গবেষণা
-
১৯২০ সালে বিজয়চন্দ্র মজুমদার চর্যাপদের ভাষা নিয়ে প্রথম আলোচনা করেন।
-
১৯২৬ সালে ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বৈজ্ঞানিকভাবে চর্যাপদের ধ্বনিতত্ত্ব, ব্যাকরণ ও ছন্দ বিশ্লেষণ করে প্রমাণ করেন যে, চর্যাপদ বাংলা ভাষায় রচিত।
-
এছাড়াও ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, ড. সুকুমার সেন, ড. শশীভূষণ দাশগুপ্ত চর্যাপদের ভাষা ও বিষয়বস্তু নিয়ে গবেষণা করেছেন।
-
১৯৪৬ সালে ড. শশীভূষণ দাশগুপ্ত চর্যাপদের সহজিয়ান প্রসঙ্গে অন্তর্নিহিত তত্ত্ব ব্যাখ্যা করেন।
-
বিহারের পণ্ডিত রাহুল সাংকৃত্যায়ন বৌদ্ধ সিদ্ধাচর্য, বৈদ্ধ সহজান এবং চর্যাগীতিকা নিয়ে ইংরেজি ও হিন্দিতে বিস্তৃত গবেষণা করেছেন।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম।
0
Updated: 2 months ago
মাইকেল মধুসূদন দত্তের রচনা নয় কোনটি?
Created: 2 months ago
A
তিলোত্তমা কাব্য
B
মেঘনাদ বধ কাব্য
C
বেতাল পঞ্চবিংশতি
D
বীরাঙ্গনা
'বেতাল পঞ্চবিংশতি' (১৮৪৭)
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রথম প্রকাশিত বই হলো ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি’। এই গ্রন্থ প্রকাশের মধ্য দিয়েই তিনি প্রথম বাংলায় যতি বা বিরামচিহ্ন ব্যবহার করেন।
'তিলোত্তমাসম্ভব' কাব্য
-
মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত একটি প্রসিদ্ধ কাব্য হলো ‘তিলোত্তমাসম্ভব’।
-
এর কাহিনী নেওয়া হয়েছে মহাভারতের সুন্দ ও উপসুন্দের কাহিনী থেকে।
-
এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৮৬০ সালে গ্রন্থাকারে।
-
এই কাব্যেই মধুসূদন প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করেন।
'মেঘনাদবধ কাব্য'
-
মধুসূদনের দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ এবং বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহাকাব্য হলো ‘মেঘনাদবধ কাব্য’।
-
এটি রচিত হয় ১৮৬১ সালের জুন মাসে।
-
মহাকাব্যের কাহিনী নেওয়া হয়েছে রামায়ণ থেকে, তবে কেবল একটি ছোট অংশকে ভিত্তি করে তিনি এ কাব্য রচনা করেন।
-
পুরো কাব্যটি নয় সর্গে রচিত, যেখানে মাত্র তিন দিন দুই রাতের ঘটনা বর্ণিত হয়েছে।
-
প্রধান চরিত্রসমূহ হলো: রাবণ, মেঘনাদ, লক্ষ্মণ, রাম, প্রমীলা, বিভীষণ, সীতা, সরমা ইত্যাদি।
-
সর্গগুলোর নাম: অভিষেক, অস্ত্রলাভ, সমাগম, অশোক বন, উদ্যোগ, বধ, শক্তিনির্ভেদ, প্রেতপুরী, সংস্ক্রিয়া।
'বীরাঙ্গনা কাব্য'
-
মাইকেল মধুসূদন দত্তের আরেকটি বিখ্যাত রচনা হলো ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’।
-
এটি পত্রাকারে লেখা কাব্য, যা প্রকাশিত হয় ১৮৬২ সালে।
-
বাংলা সাহিত্যে এই ধরনের পত্রকাব্যের সূচনা মধুসূদনের হাতেই হয়।
-
তিনি এটি রচনা করেছিলেন রোমান কবি ওভিডের ‘হেরোইডাইদ্স’ কাব্যের আদলে।
-
এতে মোট ১১টি পত্র রয়েছে।
-
এই কাব্যে পৌরাণিক নারীরা আধুনিক মনোভাব নিয়ে নিজেদের প্রেম, আকাঙ্ক্ষা ও আবেগ প্রকাশ করেছে।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 2 months ago