নিচের কোন ব্যক্তি 'বুদ্ধির মুক্তি' আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না?
A
কাজী আবদুল ওদুদ
B
এস ওয়াজেদ আলি
C
আবুল ফজল
D
আবদুল কাদি
উত্তরের বিবরণ
ঢাকা মুসলিম সাহিত্য সমাজ ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৩৮ সাল পর্যন্ত এর কার্যক্রম চলে। এটি মুসলিম সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম হল ইউনিয়ন কক্ষে বাংলা ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে ১৯২৬ সালের ১৯ জানুয়ারি এটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
সমাজের মূলমন্ত্র ছিল 'বুদ্ধির মুক্তি' এবং এর স্লোগান ছিল, "জ্ঞান যেখানে সীমাবদ্ধ, বুদ্ধি সেখানে আড়ষ্ট, মুক্তি সেখানে অসম্ভব।"
-
প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন আবুল হুসেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী, কাজী আবদুল ওদুদ, আবদুল কাদির, আবুল ফজল, আনোয়ারুল কাদির প্রমুখ।
-
বুদ্ধির মুক্তি বলতে তারা বোঝাতেন অন্ধ সংস্কার ও শাস্ত্রানুগত্য থেকে মানুষের বিচারবুদ্ধিকে মুক্ত করা।
-
সংগঠনটি নবজাগরণের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সমাজকর্ম ও সাহিত্যচর্চায় ব্রতী হয়েছিল, যার পেছনে প্রভাবিত ছিল মুস্তফা কামাল পাশার তুর্কি জাতি প্রতিষ্ঠার উদ্যম, ভারতের নবজাগরণে বিভিন্ন মণিষীর প্রয়াস, এবং মানবতার উদ্বোধনে সর্বকালের চিন্তাচেতনার সংযোগ।
-
১৯২৭ সালে সংগঠনটি 'শিখা' নামে একটি বার্ষিক মুখপত্র প্রকাশ শুরু করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিভাগের অধ্যাপক আবুল হুসেন ছিলেন প্রথম সংখ্যার সম্পাদক।
-
উল্লেখ্য, এস ওয়াজেদ আলী 'বুদ্ধির মুক্তি' আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।

0
Updated: 13 hours ago
বাংলাদেশে 'গ্রাম থিয়েটার'-এর প্রবর্তক কে?
Created: 3 weeks ago
A
মমতাজউদদীন আহমদ
B
আব্দুল্লাহ আল মামুন
C
সেলিম আল দীন
D
রামেন্দু মজুমদার
বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার এর প্রবর্তক : 'সেলিম আল দীন'।
----------------------
সেলিম আল দীন
- তিনি ছিলেন বাংলা ভাষার আধুনিককাল পর্বের অন্যতম নাট্যকার।
- তিনি ১৯৪৯ সালের ১৮ আগস্ট সীমান্তবর্তী ফেনী জেলার অন্তর্গত সোনাগাজী উপজেলার সেনেরখিল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
- নাট্যকার সেলিম আল দীনের প্রকৃত নাম মইনুদ্দিন আহমেদ ।
- ১৯৬৮ সালে কবি আহসান হাবিব সম্পাদিত ‘দৈনিক পাকিস্তান’ পত্রিকার সাহিত্য সাময়িকীতে আমেরিকার কালো মানুষদের নিয়ে তাঁর প্রথম বাংলা প্রবন্ধ 'নিগ্রো সাহিত্য' প্রকাশিত হয়।
- তাঁর প্রথম রেডিও নাটক 'বিপরীত তমসায়' ১৯৬৯ সালে এবং প্রথম টেলিভিশন নাটক আতিকুল হক চৌধুরীর প্রযোজনায় 'লিব্রিয়াম' (পরিবর্তিত নাম ঘুম নেই) প্রচারিত হয় ১৯৭০ সালে।
- ১৯৮৬ সালে তিনি নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগে যোগদান এবং উক্ত বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
- ১৯৮১-৮২ সালে নাট্যাচার্য সেলিম আল দীন নাট্য নির্দেশক নাসির উদ্দীন ইউসুফকে নিয়ে সারাদেশে গড়ে তোলেন ‘বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার’।
- বাংলাদেশের বিচিত্র শ্রমজীবী, পেশাজীবী, বাঙালি ও বাংলাদেশে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সমাজজীবন ও তাদের আবহমান কালের সংস্কৃতিকে তিনি তাঁর নাটকে মহাকাব্যিক ব্যাপ্তিদান করেছেন।
- ২০০৮ সালের ১৪ জানুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়।
তাঁর রচিত সাহিত্যকর্ম:
• কাব্যগ্রন্থ:
- কবি ও তিমি।
• উপন্যাস:
- অমৃত উপাখ্যান।
• নাটক:
- জন্ডিস ও বিবিধ বেলুন,
- বাসন,
- তিনটি মঞ্চ নাটক: মুনতাসির, শকুন্তলা ও কিত্তনখোলা,
- কেরামতমঙ্গল,
- প্রাচ্য,
- কিত্তনখোলা,
- হাতহদাই,
- যৈবতী কন্যার মন,
- চাকা,
- হরগজ,
- একটি মারমা রূপকথা,
- বনপাংশুল,
- স্বর্ণবোয়াল,
- পুত্র ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর ও বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 3 weeks ago
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নভেল কোনটি?
Created: 5 days ago
A
ক্রীতদাসের হাসি
B
জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা
C
কান্নাপর্ব
D
প্রদোষে প্রাকৃতজন
বাংলা সাহিত্যের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাসের মধ্যে ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’, ‘ক্রীতদাসের হাসি’, ‘কান্নাপর্ব’ এবং ‘প্রদোষে প্রাকৃতজন’ উল্লেখযোগ্য।
এই উপন্যাসগুলো রাজনৈতিক, সামাজিক এবং প্রান্তিক জীবনের বাস্তবতা প্রতিফলিত করেছে এবং বাংলা আখ্যানগদ্যে অনন্য ভঙ্গি ও শিল্পচর্চা উপস্থাপন করেছে।
জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা উপন্যাস সম্পর্কে:
-
রচয়িতা: শহীদুল জহির।
-
এটি একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস।
-
শহীদুল জহিরের ভাষা ও শৈলী বাংলা কথাসাহিত্যে এক অভিনব সংযোজন, যা আগে বিরল।
-
কাহিনির সংক্ষেপ: ১৯৮৫ সালে লক্ষ্মীবাজারের শ্যামাপ্রসাদ চৌধুরী লেনের যুবক আব্দুল মজিদ রায়সাহেব বাজারে যাওয়ার পথে তার স্যান্ডেলের ফিতে ছিঁড়ে যায়। ৬২ পৃষ্ঠা পরে সে তার বাড়িটি বিক্রি করে এবং লক্ষ্মীবাজার থেকে চলে যায়।
-
উপন্যাসটি ঢাকার এক মহল্লার ১৯৭১ সালের নয় মাসের জীবন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা ফুটিয়ে তোলে।
ক্রীতদাসের হাসি উপন্যাস সম্পর্কে:
-
রচয়িতা: শওকত ওসমান।
-
এটি প্রতীকাশ্রয়ী উপন্যাস, প্রকাশিত ১৯৬২ সালে।
-
উপন্যাসে তৎকালীন সামরিক শাসক আইয়ুব খানের সমালোচনা রূপক ও প্রতীকের মাধ্যমে করা হয়েছে।
-
কাহিনিতে বাগদাদের বাদশা হারুন অর রশিদ অত্যাচারী হিসেবে চিত্রিত, এবং ক্রীতদাস তাতারি তার নির্যাতনের প্রতিবাদী।
-
তাতারি বাঙালি জনগণের স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে।
-
এটি শওকত ওসমানের সর্বশ্রেষ্ঠ উপন্যাস, এবং এর জন্য তাঁকে ১৯৬৬ সালে আদমজি পুরস্কার প্রদান করা হয়।
কান্নাপর্ব উপন্যাস সম্পর্কে:
-
রচয়িতা: আহমাদ মোস্তফা কামাল।
-
এটি তাঁর তৃতীয় উপন্যাস, ২০১২ সালে ‘জেমকন সাহিত্য পুরস্কার ২০১৩’ লাভ করে।
-
উপন্যাসে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিল্পচর্চা ও শিল্পীজীবন ফুটে উঠেছে।
-
শহুরে তরুণ লেখক নিজের সীমিত জ্ঞান নিয়ে স্থানীয় যুবকের সাহায্যে প্রান্তিক জীবনের বর্ণনা উপস্থাপন করেন।
-
কাহিনি পদ্মা-ইছামতি-কালীগঙা নদীর তীরবর্তী দারিদ্র্যক্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর জীবন ও তাদের শিল্পচর্চার সঙ্গে পাঠককে পরিচয় করায়।
প্রদোষে প্রাকৃতজন উপন্যাস সম্পর্কে:
-
রচয়িতা: শওকত আলী।
-
প্রকাশিত ১৯৮৪ সালে।
-
কাহিনীটি সেন রাজাদের রাজত্বকাল ও তুর্কি আক্রমণের অব্যবহিত পূর্ব সময়ের পটভূমিতে রচিত।

0
Updated: 5 days ago
'চন্দ্রাবতী' কী?
Created: 2 weeks ago
A
নাটক
B
কাব্য
C
পদাবলী
D
পালাগান
চন্দ্রাবতী কাব্য:
-
রচয়িতা: কোরেশী মাগন ঠাকুর।
-
কাল ও প্রেক্ষাপট: মধ্যযুগে আরাকান রাজসভায় বাংলা সাহিত্যচর্চা শুরু হয়।
-
কোরেশী মাগন ঠাকুর ছিলেন আরাকান রাজসভার প্রধান উজির। তার পৃষ্ঠপোষকতায় রাজসভায় বাংলা সাহিত্যের বিকাশ ঘটে।
-
তিনি বিখ্যাত কবি আলাওলকে দুটি কাব্য, ‘পদ্মাবতী’ ও ‘সয়ফুলমুলক বদিউজ্জামান’, রচনায় উৎসাহিত করেন।
-
উল্লেখযোগ্য আরাকান রাজসভার কবি: আলাওল, দৌলত কাজী, কোরেশী মাগন ঠাকুর।
অন্যান্য চন্দ্রাবতী সম্পর্কিত তথ্য:
-
ময়মনসিংহের একজন নারী গীতিকার চন্দ্রাবতী প্রথম রামায়ণ বাংলায় অনুবাদ করেন।
-
ময়মনসিংহ-গীতিকায় নয়নচাঁদ ঘোষ নামে এক কবির ‘চন্দ্রাবতী’ সম্পর্কিত পালা আছে। এটি বিভিন্ন নামে পরিচিত, যেমন:
-
‘জয়-চন্দ্রাবতী’
-
‘চন্দ্রাবতী চরিত’
-
‘চন্দ্রাবতী উপাখ্যান’
-
-
১৯৩২ সালে দীনেশচন্দ্র সেন চন্দ্রাবতীর রামায়ণ প্রকাশ করেন। এটি পূর্ববঙ্গ-গীতিকার চতুর্থ খণ্ডের দ্বিতীয় ভাগে স্থান পেয়েছে।
উৎস: বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 2 weeks ago