বিহারীলাল চক্রবর্তীকে 'ভোরের পাখি' বলে আখ্যায়িত করেন-
A
বুদ্ধদেব বসু
B
মহাদেব সাহ
C
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
D
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
উত্তরের বিবরণ
বিহারীলাল চক্রবর্তী আধুনিক বাংলা গীতিকবিতার অন্যতম পুরোধা এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যগুরু হিসেবে পরিচিত। তিনি ১৮৩৫ সালের ২১ মে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। রবীন্দ্রনাথ তাঁকে “ভোরের পাখি” বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। কারণ, বিহারীলালই প্রথম বাংলায় ব্যক্তির আত্মলীনতা, ব্যক্তিগত অনুভূতি এবং গীতোচ্ছ্বাস সহযোগে কবিতা রচনা করেন। এর মাধ্যমে বাংলা কবিতা নতুন এক দিগন্তে প্রবেশ করে এবং তিনি ছিলেন এ ধারার পথিকৃৎ।
তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো—
-
স্বপ্নদর্শন
-
সঙ্গীতশতক
-
বন্ধুবিয়োগ
-
প্রেমপ্রবাহিণী
-
নিসর্গসন্দর্শন
-
বঙ্গসুন্দরী
-
সারদামঙ্গল
-
নিসর্গসঙ্গীত
-
মায়াদেবী
-
দেবরাণী
-
বাউলবিংশতি
0
Updated: 1 month ago
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত নাটক কোনটি?
Created: 4 days ago
A
নবান্ন
B
রাজা
C
ইডিপাস
D
কৃষ্ণকুমারী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা সাহিত্যকে নাটকের মাধ্যমে এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেন। তাঁর রচিত নাটক ‘রাজা’ মানবজীবনের রহস্য, আত্ম-অনুসন্ধান এবং ঈশ্বরচেতনার এক গভীর দার্শনিক প্রকাশ। এটি শুধুমাত্র একটি নাটক নয়, বরং মানুষের অন্তর্লোক ও আত্মার মুক্তির এক প্রতীকী উপাখ্যান, যেখানে রাজাকে দেখা যায় এক অদৃশ্য শক্তির প্রতিরূপ হিসেবে। এই নাটকটি রবীন্দ্রনাথের প্রতীকী নাটকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উদাহরণ।
• ‘রাজা’ নাটকটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯১০ সালে। এটি মূলত একটি প্রতীকী ও আধ্যাত্মিক নাটক, যেখানে রাজাকে দেখা যায় ঈশ্বর বা পরম চেতনার প্রতীক হিসেবে, আর সুরঞ্জন চরিত্রটি মানুষের আত্মাকে প্রতিনিধিত্ব করে। নাটকটির মূল বক্তব্য—মানবজীবনে সত্য ও ঈশ্বরচেতনা উপলব্ধির প্রয়াস।
• এই নাটকে রবীন্দ্রনাথের দার্শনিক ভাবনা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। রাজা এখানে দৃশ্যমান নয়, তবু তাঁর উপস্থিতি সর্বত্র অনুভূত হয়। এটি ঈশ্বরের সেই অদৃশ্য উপস্থিতির রূপক, যিনি মানুষকে অনুপ্রাণিত করেন আত্মবিকাশ ও সত্যসন্ধানে।
• নাটকের ভাষা ও সংলাপ কাব্যময়, যা একে সাধারণ বাস্তবধর্মী নাটক থেকে আলাদা করেছে। রবীন্দ্রনাথ এই নাটকের মাধ্যমে নাট্যসাহিত্যে কবিত্ব, দর্শন ও প্রতীকের এক সুমিলন ঘটান।
• ‘রাজা’ নাটকের চরিত্রগুলো প্রতীকী। যেমন—সুরঞ্জন মানুষের মন, রাজা ঈশ্বর বা অন্তর আত্মা, সুরঙ্গমা চিরসঙ্গিনী আত্মা, এবং রাজসভা মানসিক জগৎকে বোঝায়। এসব চরিত্রের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ মানুষের অন্তর্গত সংঘাত, আত্মদহন এবং মুক্তির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করেছেন।
• এই নাটকের মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ মানুষের “আত্মার রাজত্ব” ধারণা তুলে ধরেছেন। বাহ্যিক রাজা বা শক্তি নয়, বরং অন্তরের রাজাই মানুষকে পরিচালিত করে—এই দার্শনিক বক্তব্যই নাটকের মূল প্রেরণা।
• সাহিত্য বিশারদদের মতে, ‘রাজা’ নাটকটি রবীন্দ্রনাথের ‘প্রতীকী নাটক ত্রয়ী’—রাজা, ডাকঘর, ও মুকুট—এর মধ্যে সবচেয়ে গভীরতর ভাবসম্পন্ন রচনা।
অন্য বিকল্পগুলো সঠিক নয় কারণ—
-
‘নবান্ন’ নাটকটি রচিত হয়েছে বিজন ভট্টাচার্য কর্তৃক, যেখানে বাংলার দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের জীবনচিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
-
‘ইডিপাস’ একটি গ্রিক ট্র্যাজেডি, যার রচয়িতা সফোক্লিস; এটি ভাগ্য ও নিয়তির বিরুদ্ধে মানব সংগ্রামের গল্প।
-
‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটকটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত, যেখানে ঐতিহাসিক পটভূমিতে রাজনীতি ও প্রেমের সংঘাত দেখা যায়।
অতএব, উপর্যুক্ত বিশ্লেষণ থেকে স্পষ্ট যে ‘রাজা’ নাটকটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনন্য দার্শনিক ও প্রতীকী নাট্যকর্ম, যা বাংলা নাট্যসাহিত্যে এক যুগান্তকারী সংযোজন হিসেবে বিবেচিত।
0
Updated: 4 days ago
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোন কাব্যে প্রথম একজন কবির সাথে শিল্পীর যোগ হয়েছে?
Created: 3 weeks ago
A
গীতাঞ্জলী
B
মানসী
C
সোনারতরী
D
বলাকা
এই উক্তিটি ড. সৌমিত্র শেখর রচিত ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যগ্রন্থ ‘মানসী’ সম্পর্কে মত প্রকাশ করা হয়েছে। এই কাব্যগ্রন্থে রবীন্দ্রনাথের কাব্যচর্চায় এক নতুন যুগের সূচনা লক্ষ্য করা যায়, যেখানে তিনি শুধু কবি নন, এক জন সম্পূর্ণ শিল্পী হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেছেন।
-
‘মানসী’ কাব্যে রবীন্দ্রনাথের কবিত্বে ছন্দের বৈচিত্র্য ও সুরের অভিনবতা লক্ষ্য করা যায়।
-
এই কাব্যের মাধ্যমে কবি ভাব, রূপ ও ছন্দের সমন্বয় ঘটিয়ে এক নতুন কাব্যধারার সূচনা করেন।
-
এতে দেখা যায়, কবি শুধুমাত্র ভাবপ্রবণ নন, বরং তিনি একজন সচেতন শিল্পী, যিনি শব্দ, সুর ও ভাবের নিখুঁত মেলবন্ধন ঘটাতে সক্ষম।
-
ছন্দের নানা খেয়াল বা বৈচিত্র্য কবির কাব্যপ্রতিভাকে আরো শিল্পমণ্ডিত করেছে, যা তাকে পূর্ববর্তী রোমান্টিক ধারা থেকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে।
-
অর্থাৎ, ‘মানসী’ থেকে রবীন্দ্রনাথের কবিতায় রূপ ও কারুকার্যের এক নন্দনধর্মী বিবর্তন শুরু হয়, যেখানে কবির সঙ্গে শিল্পীর সমন্বয় সম্পূর্ণতা পায়।
0
Updated: 3 weeks ago
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত 'দেনাপাওনা' গল্পের উপজীব্য বিষয় কী?
Created: 1 month ago
A
প্রেম বিরোহ
B
যৌতুক প্রথা
C
রাজনীতি
D
ধর্মীয় কুসংস্কার
‘দেনাপাওনা’ ছোটগল্পটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘গল্পগুচ্ছ’ থেকে সংকলিত। গল্পে তৎকালীন হিন্দু সমাজে পণপ্রথার কুফল এবং এর বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়াস প্রতিফলিত হয়েছে। লেখক যৌতুক নামক সামাজিক ব্যাধির নির্মম চিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন, যা যৌতুক গ্রহণকারীদের প্রতি ঘৃণার জন্ম দেয়। গল্পের নায়িকা হলেন নিরূপমা।
-
লেখক: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
-
জন্ম: ১৮৬১ সালের ৭ মে, কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে।
-
পিতা: মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মাতা: সারদা দেবী।
-
শৈশবেই কবি-প্রতিভার উন্মেষ ঘটে।
-
১৯১৩ সালে ইংরেজি ‘গীতাঞ্জলি’ (১৯১১) কাব্যের জন্য নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।
-
বাংলা ছোট গল্পের জনক হিসেবে পরিচিত।
-
ছোট গল্পগুলি ‘গল্পগুচ্ছ’ তিন খণ্ডে সংকলিত।
-
প্রথম গল্পসংগ্রহ: ‘ছোটগল্প’।
রবীন্দ্রনাথের সামাজিক গল্পের কিছু উদাহরণ:
-
দেনাপাওনা
-
দান প্রতিদান
-
হৈমন্তি
-
ছুটি
-
পোস্ট মাস্টার
-
কাবুলিওয়ালা
রবীন্দ্রনাথের গল্পগ্রন্থ:
-
কথা-চতুষ্টয়
-
বিচিত্র গল্প (দুই খণ্ড)
-
গল্প দশক
-
গল্পগুচ্ছ
-
গল্পসপ্তক
-
‘দেনাপাওনা’ সমাজের যৌতুক ও পণপ্রথার অবৈধতা ও মানবিক ক্ষতি প্রদর্শন করে।
-
গল্পে নারী চরিত্রের সাহস ও ন্যায়ের অন্বেষণ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
-
রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্পে সাধারণ মানুষের জীবন, সামাজিক সমস্যা ও নৈতিক মূল্যবোধের প্রতিফলন দেখা যায়।
0
Updated: 1 month ago