নিচের কোনটি আলোর প্রতিসরণের একটি উদাহরণ?
A
ছায়া সৃষ্টি হওয়া
B
আয়নায় মুখ দেখা
C
পানিতে বৈঠা বাঁকা দেখা
D
চোখে সরাসরি সূর্যের আলো পড়া
উত্তরের বিবরণ
আলোর প্রতিসরণ হলো এমন একটি অপটিক্যাল ঘটনা যেখানে আলো একটি স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে প্রবেশ করার সময় তার গতিপথের দিক পরিবর্তন করে। এটি দুইটি মাধ্যমের ঘনত্বের উপর নির্ভর করে এবং এর ফলে বস্তুদের প্রকৃত অবস্থান কিছুটা ভিন্ন দেখায়। নিচে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা দেওয়া হলো।
-
আলোর প্রতিসরণ:
-
যখন আলো একটি স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে প্রবেশ করে, তখন আলোর গতিপথের দিক পরিবর্তন ঘটে।
-
প্রতিসরণ ঘটে যখন আলোর রশ্মি অভিলম্বের দিকে আসে বা অভিলম্ব থেকে সরে যায়।
-
প্রতিসরণের মান দুইটি মাধ্যমের ঘনত্বের পার্থক্যের উপর নির্ভর করে।
-
আলোর প্রতিসরণের কারণে বস্তুগুলোর প্রকৃত অবস্থান চোখে ভিন্ন দেখা যায়।
-
-
আলোর প্রতিসরণের উদাহরণ:
-
পুকুরের পানির মধ্যে মাছকে উপরের দিকে স্থানান্তরিত দেখা যায়।
-
সরল দণ্ডকে পানিতে তীর্যকভাবে ডুবালে বাঁকা দেখা যায়।
-
পানিতে ডুবানো পয়সা উপরের দিকে স্থানান্তরিত দেখা যায়।
-
খাড়াভাবে পুকুরের গভীরতা দেখলে এটি প্রকৃত গভীরতার থেকে কম মনে হয়।
-
পানিতে নৌকার বৈঠা বাঁকা দেখা যায়।
-
-
যা প্রতিসরণ নয়:
-
ছায়া সৃষ্টি হওয়া: এটি আলোর প্রতিবন্ধকতা এবং সরলরেখায় চলাচলের কারণে ঘটে।
-
আয়নায় মুখ দেখা: এটি প্রতিফলনের উদাহরণ।
-
চোখে সরাসরি সূর্যের আলো পড়া: এটি কোনো বিশেষ অপটিক্যাল ঘটনা নয়।
-
উৎস:
0
Updated: 1 month ago
আলোর প্রতিসরণের সূত্র আবিষ্কার করেন কে?
Created: 3 weeks ago
A
হাইগেন
B
স্নেল
C
রবার্ট হুক
D
আলহাজেন
আলোর প্রতিসরণ হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে কোনো আলোক রশ্মি এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে তির্যকভাবে প্রবেশ করলে তার গমনদিক পরিবর্তিত হয়। এই দিক পরিবর্তনের ঘটনাকেই আলোর প্রতিসরণ (Refraction of Light) বলা হয়। প্রতিসরণের ফলে আলো বেঁকে যায়, কারণ বিভিন্ন মাধ্যমে আলোর বেগ ভিন্ন হয়।
-
যখন আলো এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে যায়, তখন দুই মাধ্যমের বিভেদ তলে দিক পরিবর্তনের ঘটনাই প্রতিসরণ।
-
বিভেদ তলের উপর আপতন বিন্দুতে অঙ্কিত লম্বকে বলা হয় অভিলম্ব (Normal)।
-
আপতিত রশ্মি ও অভিলম্বের মধ্যকার কোণ হলো আপতন কোণ (Angle of Incidence) এবং প্রতিসরিত রশ্মি ও অভিলম্বের মধ্যকার কোণ হলো প্রতিসরণ কোণ (Angle of Refraction)।
-
আলো ঘন মাধ্যমের দিকে গেলে রশ্মি অভিলম্বের দিকে বেঁকে যায়, আর হালকা মাধ্যমের দিকে গেলে অভিলম্ব থেকে দূরে বেঁকে যায়।
-
প্রতিসরণের ফলে বস্তু তার প্রকৃত অবস্থান থেকে ভিন্ন স্থানে দেখা যায়—যেমন, জলে রাখা কাঠি ভাঙা মনে হয়।
প্রতিসরণের সূত্র (Snell’s Laws of Refraction):
১৬২০ সালে বিজ্ঞানী স্নেল আলোর প্রতিসরণের দুটি মৌলিক সূত্র প্রকাশ করেন, যা স্নেলের সূত্র নামে পরিচিত।
১. প্রথম সূত্র: দুই মাধ্যমের বিভেদ তলে আপতিত রশ্মি, প্রতিসরিত রশ্মি এবং আপতন বিন্দুতে অঙ্কিত অভিলম্ব একই সমতলে অবস্থান করে।
২. দ্বিতীয় সূত্র: নির্দিষ্ট দুই মাধ্যম ও নির্দিষ্ট বর্ণের আলোর জন্য আপতন কোণের সাইন এবং প্রতিসরণ কোণের সাইনের অনুপাত সর্বদা ধ্রুব থাকে।
অর্থাৎ,
sin i / sin r = ধ্রুবক (n)
-
এই ধ্রুবকটিকে বলা হয় প্রতিসরণাঙ্ক (Refractive Index), যা দুটি মাধ্যমের মধ্যকার আলোর বেগের অনুপাত নির্দেশ করে।
-
সূত্র অনুযায়ী, n = v₁ / v₂, যেখানে v₁ হলো প্রথম মাধ্যমে আলোর বেগ এবং v₂ হলো দ্বিতীয় মাধ্যমে আলোর বেগ।
-
প্রতিসরণ দৈনন্দিন জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেমন—লেন্স, প্রিজম, চোখের গঠন, ও অপটিক্যাল যন্ত্রপাতির কাজ প্রতিসরণের উপর নির্ভরশীল।
0
Updated: 3 weeks ago
কোন কারণে পানি দিয়ে পূর্ণ পুকুরের নিচের পাথর ও শৈবাল অনেক কাছে দেখা যায়?
Created: 1 month ago
A
অপবর্তন
B
আলোর প্রতিসরণ
C
আলোর প্রতিফলন
D
পোলারাইজেশন
পানি দিয়ে পূর্ণ পুকুরের পাথর ও শৈবাল অনেক কাছে দেখা যায় মূলত আলোর প্রতিসরণের কারণে। আলোর প্রতিসরণ হল আলোর এক স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমে প্রবেশের সময় তার গতিপথের দিক পরিবর্তন। আলোক রশ্মি একটি নির্দিষ্ট স্বচ্ছ মাধ্যমে সরল রেখায় চললেও, অন্য মাধ্যমে প্রবেশের সাথে সাথেই এটি মাধ্যমের আলোকীয় বৈশিষ্ট্য অনুসারে দিক পরিবর্তন করে। লম্বভাবে কোনো মাধ্যমে প্রবেশ করলে আলোর গতিপথের কোনো পরিবর্তন হয় না।
-
আলোর প্রতিসরণের নিয়ম:
• আলোক রশ্মি যখন হালকা মাধ্যম থেকে ঘন মাধ্যমে প্রবেশ করে, তখন এটি অভিলম্বের দিকে সরে আসে। এ ক্ষেত্রে আপতন কোণ প্রতিসরণ কোণ অপেক্ষা বড় হয়।
• আলোক রশ্মি প্রথমে একটি মাধ্যম থেকে (যেমন বায়ু) অন্য মাধ্যমে (যেমন কাচ) প্রতিসরিত হলে এবং পরে একই মাধ্যমে পুনরায় নির্গত হলে আপতন কোণ ও নির্গমন কোণ সমান হয়।
• আপতিত রশ্মি, প্রতিসরিত রশ্মি এবং আপতন বিন্দুতে দুই মাধ্যমের বিভেদ তলে অঙ্কিত অভিলম্ব একই সমতলে থাকে।
• আলোক রশ্মি যখন ঘন মাধ্যম থেকে হালকা মাধ্যমে প্রবেশ করে, তখন এটি অভিলম্ব থেকে দূরে সরে যায়। এই ক্ষেত্রে আপতন কোণ প্রতিসরণ কোণ অপেক্ষা ছোট হয়।
• আলোক রশ্মি যদি অভিলম্ব বরাবর প্রবেশ করে, তখন আপতন কোণ, প্রতিসরণ কোণ ও নির্গত কোণ শূন্য হয় এবং রশ্মির দিক পরিবর্তন হয় না। -
প্রতিসরণের বাস্তব প্রয়োগ:
• বর্ষার সময় স্বচ্ছ পানির জন্য পুকুর ঘাটের সিঁড়িটা আসলে যেখানে আছে তার চেয়ে একটু নিচে দেখা যায়, ফলে অনেকেই বুঝতে না পেরে পড়ে যায়।
• সেন্টমার্টিন দ্বীপের পাশে অবস্থিত ছেঁড়া দ্বীপের স্বচ্ছ পানিতে নিচের পাথর ও শৈবাল অনেক কাছে মনে হয়। এটি মূলত আলোর প্রতিসরণের কারণে এমন দেখা যায়।
0
Updated: 1 month ago