'বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদে এল বান' - এখানে 'টাপুর টুপুর' কোন ধরনের শব্দ?
A
অবস্থাবাচক শব্দ
B
বাক্যালঙ্কার শব্দ
C
ধ্বন্যাত্মক শব্দ
D
দ্বিরুক্ত শব্দ
উত্তরের বিবরণ
ভাষায় কিছু শব্দ এমন হয় যেগুলো প্রাকৃতিক কোনো ধ্বনির অনুকরণে গঠিত। এই ধরনের শব্দগুলোকে আমরা ধ্বন্যাত্মক শব্দ বলি। উদাহরণস্বরূপ, বৃষ্টির শব্দ ‘টাপুর-টুপুর’ ধ্বন্যাত্মক শব্দ হিসেবে পরিচিত।
শব্দদ্বিত্ব বা দ্বিরুক্ত শব্দ তিন ধরণের হয়ে থাকে, যথা:
১. অনুকার দ্বিত্ব
২. ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব
৩. পুনরাবৃত্ত দ্বিত্ব
এখানে বিশেষ করে ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব নিয়ে আলোচনা করা হলো।
ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব কী?
যেসব শব্দ প্রাকৃতিক কোনো শব্দ বা ধ্বনির নকল হিসেবে গঠিত, সেগুলো ধ্বন্যাত্মক শব্দ। যখন এই ধরনের শব্দ পর পর দু’বার বা তার বেশি ব্যবহার করা হয়, তখন তা ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব হিসেবে গণ্য হয়।
উদাহরণস্বরূপ:
-
ঠন ঠন
-
কুট কুট
-
কোঁত কোঁত
-
খক খক
-
টুং টুং
-
ঝমঝম
-
ধুপ ধুপর শোঁ শোঁ ইত্যাদি।
ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্বে স্বরধ্বনির ব্যবহার
কিছু ক্ষেত্রে এই ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্বের মধ্যে স্বরবর্ণ প্রবেশ করে, যা শব্দের অর্থকে আরও গভীর করে এবং অব্যাহত বা ধারাবাহিক ধ্বনির অনুভূতি দেয়।
যেমন:
-
খপাখপ
-
টাপুর-টুপুর
-
হবাগব
-
ঝটাঝট
-
ফটাফট
-
দমাদম
-
পটাপট
‘টাপুর-টুপুর’ শব্দটি বিশেষভাবে বৃষ্টির ঝরনার নিখুঁত অনুকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
অতিরিক্ত তথ্য
পুরনো কিছু বাংলা বোর্ড বইয়ে ‘টাপুর-টুপুর’ শব্দটিকে অব্যয় দ্বিরুক্তি হিসেবে উল্লেখ করা হলেও, আধুনিক ব্যাকরণের নতুন সংস্করণে অব্যয় পদ বা দ্বিরুক্তি হিসেবে এই ধরনের শ্রেণীবিভাগ বাদ দেওয়া হয়েছে।
উৎস:
ভাষা-শিক্ষা, ড. হায়াৎ মামুদ
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি, নবম-দশম শ্রেণি (২০২২ সংস্করণ)

0
Updated: 2 months ago