বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যজগতে তাঁর প্রথম পদার্পণেই নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। সাহিত্যের নানা শাখায় তাঁর প্রথম প্রকাশিত কৃতিগুলি তাঁর বৈচিত্র্যময় প্রতিভার প্রমাণ বহন করে। নিচে তাঁর প্রথম প্রকাশিত সাহিত্যকর্মগুলো ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরা হলো:
প্রথম কাব্যগ্রন্থ:
‘অগ্নি-বীণা’ (১৯২২) — নজরুলের বিদ্রোহী আত্মার প্রতীক এই গ্রন্থ বাংলা কাব্যধারায় অনন্য স্থান অধিকার করে।
প্রথম প্রকাশিত কবিতা:
‘মুক্তি’ — এই কবিতার মাধ্যমে নজরুল তাঁর কাব্য-প্রতিভার সূচনা ঘটান, যেখানে মুক্তির চেতনা ফুটে ওঠে।
প্রথম প্রকাশিত প্রবন্ধ:
‘তুর্কমহিলার ঘোমটা খোলা’ — সামাজিক প্রগতির আহ্বান জানানো এই প্রবন্ধে নজরুল নারীমুক্তির প্রশ্নে সাহসী অবস্থান নেন।
প্রথম প্রবন্ধগ্রন্থ:
‘যুগবাণী’ — সমাজ, রাজনীতি ও ধর্ম বিষয়ক বিভিন্ন চিন্তাধারা নিয়ে রচিত এই গ্রন্থটি পরে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়, যা নজরুলের প্রগতিশীল মনোভাবের প্রমাণ।
প্রথম গল্পগ্রন্থ:
‘ব্যথার দান’ — ছোটগল্পের মধ্য দিয়ে মানব-ব্যথা ও সমাজবাস্তবতার চিত্র তুলে ধরেছেন।
প্রথম উপন্যাস:
‘বাঁধন-হারা’ — এই উপন্যাসে নজরুল ব্যক্তিস্বাধীনতা ও সমাজচিত্রকে কেন্দ্র করে এক নতুন ধারার সূচনা করেন।
প্রথম নাটক ও নাট্যগ্রন্থ:
‘ঝিলিমিলি’ — নাট্যসাহিত্যে নজরুলের প্রথম অবদান হিসেবে এই গ্রন্থ উল্লেখযোগ্য, যা নাট্যশৈলীতে নতুন গতি এনেছে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, 'যুগবাণী' ছিল তাঁর প্রথম প্রবন্ধগ্রন্থ এবং এটিই ছিল নজরুলের প্রথম নিষিদ্ধ গ্রন্থ, যা তাঁর লেখনীতে বিপ্লবের ঝাঁঝ প্রতিফলিত করে।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর