'বিষাদ-সিন্ধু' কার রচনা? 

A

কায়কোবাদ 

B

মীর মশাররফ হোসেন 

C

মোজাম্মেল হক 

D

ইসমাইল হোসেন সিরাজী

উত্তরের বিবরণ

img

বিষাদ-সিন্ধু’ (১৮৮৫–১৮৯১) হলো বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস আশ্রিত এক অনন্য উপন্যাস, যা লেখক মীর মশাররফ হোসেনকে অসামান্য খ্যাতির আসনে অধিষ্ঠিত করে। কারবালার মর্মান্তিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত এই উপন্যাসে হাসান ও হোসেনের শাহাদাতের করুণ কাহিনি, দামেস্ক শাসক মাবিয়ার পুত্র এজিদের রক্তপিপাসু চরিত্র এবং জয়নাবের রূপে মোহিত হয়ে বহু মানুষের ধ্বংসযজ্ঞ—সবকিছু মিলিয়ে এটি হয়ে উঠেছে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবিক আবেগের এক বিস্ময়কর মহাগাঁথা।

তবে ইতিহাসের প্রতি অন্ধ আনুগত্য নয়, বরং তা থেকে শিল্পসাহিত্যের উপযোগী বেছে নেওয়া কৌশল এই উপন্যাসকে করেছে স্বকীয়। গ্রন্থটি তিনটি পর্বে বিভক্ত:

  • মহরম পর্ব্ব (১৮৮৫)

  • উদ্ধার পর্ব্ব (১৮৮৭)

  • এজিদ-বধ পর্ব্ব (১৮৯১)

এই তিনটি পর্বে রয়েছে মোট ৬৩টি 'প্রবাহ' বা অধ্যায়—যার মধ্যে মহরম পর্বে ২৬টি প্রবাহসহ উপক্রমণিকা, উদ্ধার পর্বে ৩০টি প্রবাহ, এবং এজিদ-বধ পর্বে ৫টি প্রবাহ ও উপসংহার অংশ রয়েছে।

এই উপন্যাসের জনপ্রিয়তার পেছনে মূলত দুটি প্রধান কারণ:

  1. ইসলাম ধর্মঘটিত স্পর্শকাতর কাহিনি, যা মুসলিম পাঠকের হৃদয়ে গভীর আবেদন সৃষ্টি করে।

  2. সাহিত্যিক গুণ ও শৈলী, যা জ্ঞানপিপাসু ও রসিক পাঠকের কাছে এটিকে একটি শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্মে পরিণত করেছে।

এখানে মাইকেল মধুসূদনের ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ থেকে অনুপ্রাণিত অ্যান্টি-এস্টাব্লিশমেন্ট চেতনার প্রতিফলনও লক্ষণীয়।


মীর মশাররফ হোসেন: পথিকৃৎ মুসলিম সাহিত্যিক

মীর মশাররফ হোসেন জন্মগ্রহণ করেন ১৩ নভেম্বর ১৮৪৭ সালে, কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়া গ্রামে। তিনি ছিলেন ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক—বাংলা গদ্যসাহিত্যের বঙ্কিমযুগের একজন গুরুত্বপূর্ণ লেখক এবং মুসলিম সমাজে সাহিত্যজাগরণের অন্যতম অগ্রদূত।

ছাত্রজীবনেই ‘সংবাদ প্রভাকর’ ও ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’য় সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করে তিনি লেখালেখির সূচনা করেন। তাঁর সাহিত্যগুরু ছিলেন ‘গ্রামবার্তা’র সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ

তিনি ‘গাজী মিয়াঁ’ ছদ্মনামে লেখালেখি করতেন। সম্পাদনা করেছেন দুটি পত্রিকা—‘আজিজননেহার’‘হিতকরী’

প্রথম রচনা:

  • ‘রত্নবতী’ (১৮৬৯): এটি বাংলা ভাষায় কোনো মুসলিম লেখকের প্রথম গদ্যগ্রন্থ।

🎭 নাটক:

  • বসন্তকুমারী

  • জমিদার দর্পণ

  • বেহুলা গীতাভিনয়

আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ:

  • গাজী মিয়াঁর বস্তানী

  • আমার জীবনী

  • কুলসুম জীবনী

প্রবন্ধগ্রন্থ:

  • গো-জীবন


এইভাবে মীর মশাররফ হোসেন তাঁর সাহিত্যসাধনায় যেমন ধর্ম ও ইতিহাসকে সৃজনশীল রূপে প্রকাশ করেছেন, তেমনি বাংলা গদ্যসাহিত্যের উন্নয়নে রেখেছেন অমোচনীয় অবদান।

তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপিডিয়া।

Unfavorite

0

Updated: 3 months ago

Related MCQ

'সূর্য-দীঘল বাড়ী' — উপন্যাসটি কত সালে গ্রন্থাকারে প্রকাশ পায়?

Created: 4 weeks ago

A


১৯৪৫ সালে

B



১৯৫৫ সালে

C



১৯৫৮ সালে

D



১৯৫১ সালে

Unfavorite

0

Updated: 4 weeks ago

'বদিউল আলম' চরিত্রটি কোন উপন্যাসের অন্তর্গত?

Created: 2 months ago

A

অনীল বাগচীর

B

শ্যামল ছায়া

C

আগুনের পরশমণি

D

শ্যামল ছায়া

Unfavorite

0

Updated: 2 months ago

'হায়! জীবন এতো ছোট ক্যানে? এই ভুবনে'- বিখ্যাত সংলাপটি কোন উপন্যাসের অন্তর্ভুক্ত?


Created: 3 weeks ago

A

কালিন্দী


B

কবি


C

হাঁসুলি বাঁকের উপকথা


D

আরগ্য নিকেতন


Unfavorite

0

Updated: 3 weeks ago

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD