‘শাসক যদি মহৎগুণসম্পন্ন হয় তাহলে আইন নিষ্প্রয়ােজন, আর শাসক যদি মহৎগুণসম্পন্ন না হয় তাহলে আইন অকার্যকর’-এটি কে বলেছেন?
A
সক্রেটিস
B
প্লেটো
C
অ্যারিস্টটল
D
বেনথাম
উত্তরের বিবরণ
নীতিশাস্ত্র মূলত মানুষের আচার-আচরণ এবং ভালো-মন্দের বিচারের সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি সমাজে নৈতিকতা ও আইনকে সংযুক্ত করে ব্যাখ্যা করে। নৈতিকতা এবং আইন সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো হলো:
-
মানুষের আচার-আচরণের মূল্যায়ন, যা ভালো এবং মন্দ নির্ধারণ করে, তা নীতিশাস্ত্রের মূল বিষয়।
-
সমাজে সর্বজন স্বীকৃত নৈতিক আদর্শই পরবর্তীতে রাষ্ট্রীয় আইন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
যদি কোনো দেশের প্রচলিত আইন নৈতিকতার বিরোধী হয়, তবে সেই আইন কার্যকর হয় না।
-
কারণ, কোনো রাষ্ট্রীয় আইন যদি জনগণের নৈতিক মানদণ্ডের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ হয়, তখন তার বিরুদ্ধে গণআন্দোলনের সম্ভাবনা থাকে।
প্লেটো তাঁর ‘রিপাবলিক’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, “যদি শাসক ন্যায়বান হন, তাহলে আইন প্রয়োজন হয় না; আর যদি শাসক দুর্নীতিপরায়ণ হন, তাহলে আইনও কার্যকর হয় না।”

0
Updated: 11 hours ago
সরকারি সিদ্ধান্ত প্রণয়নে কোন মূল্যবোধটি গুরুত্বপূর্ণ নয়?
Created: 2 weeks ago
A
বিশ্বস্ততা
B
সৃজনশীলতা
C
নিরপেক্ষতা
D
জবাবদিহিতা
সরকারি সিদ্ধান্ত প্রণয়নে সৃজনশীলতার গুরুত্ব ও সুশাসন
সুশাসন হলো এমন একটি শাসনব্যবস্থা, যেখানে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা সঠিক ও ন্যায্যভাবে প্রয়োগ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় জনগণ সরকারের কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়, নীতি ও সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবগত থাকে এবং নারী-পুরুষ সমানভাবে মতামত প্রকাশ করতে পারে।
সুশাসন কেবল স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাই নয়, বরং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে, সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করে।
বাংলাদেশের বাস্তবতায় সুশাসন
আমাদের দেশে এখনও পূর্ণ সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়নি।
-
পুঁজিবাদের সঠিক বিকাশ হয়নি।
-
দাঙ্গা, হরতাল, অবরোধ রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে।
-
আন্তর্জাতিক সূচকে দুর্নীতি এখনো বেশ উচ্চমাত্রায় বিদ্যমান।
-
যদিও সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উন্নতি হয়েছে, তবুও সার্বিকভাবে সুশাসনের মান এখনো সন্তোষজনক নয়।
সুশাসনের মূল বৈশিষ্ট্য
সাধারণভাবে সুশাসন একটি দেশের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। এতে জনগণ আত্মনির্ভরশীল হয় এবং সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠিত হলে সামাজিক ন্যায়বিচার ও বহুত্ববাদ নিশ্চিত হয়। তাই সুশাসনের ধারণা বহুমাত্রিক।
এটি মূলত চার ভাগে ভাগ করা যায়:
-
রাজনৈতিক সুশাসন → গণতন্ত্র ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ
-
অর্থনৈতিক সুশাসন → মুক্তবাজার অর্থনীতি ও বেসরকারিকরণ
-
সামাজিক-সাংস্কৃতিক সুশাসন → সামাজিক ন্যায়বিচার ও বহুত্ববাদ
-
প্রযুক্তিগত সুশাসন → বিশ্বব্যাপী তথ্যপ্রযুক্তির প্রসার
সুশাসনের প্রধান উপাদান
১. স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা
২. জনগণের অংশগ্রহণ
৩. আইনের শাসন
৪. নিরপেক্ষতা ও দায়িত্বশীলতা
৫. উন্নত জনপ্রশাসন ও বিকেন্দ্রীকরণ
উৎস: পৌরনীতি ও সুশাসন (প্রথম পত্র), একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি, মো: মোজাম্মেল হক

0
Updated: 2 weeks ago
জাতিসংঘের অভিমত অনুসারে সুশাসনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো -
Created: 1 week ago
A
দারিদ্র বিমোচন
B
মৌলিক অধিকার রক্ষা
C
মৌলিক স্বাধীনতার উন্নয়ন
D
নারীদের উন্নয়ন ও সুরক্ষা
জাতিসংঘ ও সুশাসন
জাতিসংঘ ১৯৯৭ সালে “Governance and Sustainable Development” শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই প্রতিবেদনে প্রথমবারের মতো সুশাসনের ধারণা এবং এর গুরুত্ব জাতিসংঘের দৃষ্টিকোণ থেকে তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনের মতে, সুশাসনের মূল লক্ষ্য হলো মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা উন্নয়ন করা।
কারণ:
-
যখন মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়, তখন মানুষ তাদের অধিকার ও স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করতে পারে।
-
একই সময়ে, নারীর উন্নয়ন ও সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।
-
এর ফলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ঘটে এবং দারিদ্র্য হ্রাস পায়।
জাতিসংঘ সুশাসন প্রয়োগের ক্ষেত্রে ৮টি মূল উপাদান চিহ্নিত করেছে:
-
অংশগ্রহণ
-
মতামতের প্রতি মনোযোগ
-
জবাবদিহিতা
-
স্বচ্ছতা
-
দায়বদ্ধতা
-
কার্যকরী ও দক্ষ প্রশাসন ব্যবস্থা
-
ন্যাযতা
-
আইনের শাসন
উৎস: জাতিসংঘ ওয়েবসাইট

0
Updated: 1 week ago
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (Millennium Development Goals) অর্জনে সুশাসনের কোন দিকটির উপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে?
Created: 3 weeks ago
A
সুশাসনের সামাজিক দিক
B
সুশাসনের অর্থনৈতিক দিক
C
সুশাসনের মূল্যবোধের দিক
D
সুশাসনের গণতান্ত্রিক দিক
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (MDG) ও সুশাসনের সামাজিক দিক
-
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (MDG) এর পূর্ণরূপ Millennium Development Goals। এগুলো মূলত বিশ্বে চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ ও মানুষের জীবনমান উন্নত করার জন্য জাতিসংঘের উদ্যোগে ২০০০ সালে নির্ধারণ করা হয়।
-
৬–৮ সেপ্টেম্বর ২০০০ সালে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন সম্মেলনে (UN Millennium Summit) ৮টি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় এবং তা অর্জনের জন্য ১৫ বছরের সময়সীমা দেওয়া হয়।
-
এই লক্ষ্যগুলো হলো:
-
চরম দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নির্মূল
-
সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা
-
লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন
-
শিশু মৃত্যুহার হ্রাস
-
মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নতি
-
এইচআইভি/এইডস, ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ
-
পরিবেশগত স্থায়িত্ব নিশ্চিতকরণ
-
উন্নয়নের জন্য বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব গঠন
-
-
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে সুশাসনের গুরুত্ব
-
সুশাসন ও MDG অর্জনের মধ্যে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক আছে।
-
এখানে সামাজিক দিক বলতে বোঝানো হয় জনমত গঠন, সচেতনতা বৃদ্ধি, নীতি প্রণয়ন, এবং সামাজিক জবাবদিহি।
-
এছাড়াও আর্থিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি সঠিকভাবে বজায় রাখাও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
-
মূলত, সুশাসনের সামাজিক ও আর্থ-সামাজিক দিকের সমন্বয় MDG অর্জনের জন্য প্রয়োজন।
-
উপসংহার:
সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য সফল করতে সুশাসনের সামাজিক দিককে প্রাধান্য দিতে হবে। সরাসরি বলা না হলেও, এটি MDG অর্জনের মূল ভিত্তি।
উৎস: জাতিসংঘ (United Nations)

0
Updated: 3 weeks ago