উপসর্গ ও 'অ' উপসর্গের ব্যবহার
‘অচিন’ শব্দে ব্যবহৃত ‘অ’ উপসর্গটি নঞর্থক বা অভাবসূচক অর্থ প্রকাশ করে।
‘অ’ উপসর্গযুক্ত কিছু শব্দ উদাহরণস্বরূপ:
-
নিন্দার্থে: অকেজো, অচেনা, অপয়া
-
অভাব বোঝাতে: অচিন, অজানা, অথৈ
-
ক্রমবর্ধমান বা অবিরাম অর্থে: অঝোর, অঝোরে
উপসর্গ কী?
বাংলা ভাষায় এমন কিছু শব্দাংশ আছে যা মূল শব্দ বা ধাতুর পূর্বে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করে। এই ধরনের শব্দাংশকে উপসর্গ বলা হয়।
বাংলা ভাষায় উপসর্গ তিন শ্রেণির:
১. খাঁটি বাংলা উপসর্গ
২. সংস্কৃত বা তৎসম উপসর্গ
৩. বিদেশি উপসর্গ
১. খাঁটি বাংলা উপসর্গ
বাংলা ভাষার নিজস্ব উপসর্গগুলোকে খাঁটি বাংলা উপসর্গ বলা হয়। মোট ২১টি খাঁটি বাংলা উপসর্গ রয়েছে।
এগুলো হলো:
অ, অঘা, অজ, অনা, আ, আড়, আন, আব, ইতি, ঊন (ঊনা), কদ, কু, নি, পাতি, বি, ভর, রাম, স, সা, সু, হা
[বি, নি, সু ও আ – এই উপসর্গগুলো তৎসম শব্দেও ব্যবহৃত হয়।]
২. সংস্কৃত বা তৎসম উপসর্গ
সংস্কৃত উৎস থেকে আগত উপসর্গগুলোকে তৎসম বা সংস্কৃত উপসর্গ বলা হয়।
সংস্কৃত উপসর্গের সংখ্যা ২০টি।
উদাহরণ:
প্র, পরা, অপ, সম, নি, অনু, অব, নির, দুর, বি, অধি, সু, উৎ, পরি, প্রতি, অতি, অভি, অপি, উপ, আ
৩. বিদেশি উপসর্গ
বাংলা ভাষায় বহুল ব্যবহৃত কিছু বিদেশি শব্দের সঙ্গে সঙ্গে কিছু বিদেশি উপসর্গও গৃহীত হয়েছে।
এসব উপসর্গের সংখ্যা নির্দিষ্টভাবে বলা যায় না, তবে ভাষা অনুযায়ী কিছু উদাহরণ:
-
আরবি: আম, খাস, লা, গর, বাজে, খয়ের
-
ফারসি: কার, দর, না, নিম, ফি, বদ, বে, বর, ব, কম
-
উর্দু: হর
-
ইংরেজি: হেড, সাব, ফুল, হাফ
উৎস:
-
প্রমিত বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি, ড. হায়াৎ মামুদ
-
বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, নবম-দশম শ্রেণি (২০১৯ সংস্করণ)