বাংলা ভাষায় কিছু শব্দাংশ থাকে, যেগুলো মূল শব্দ বা ধাতুর আগে বসে নতুন শব্দ গঠন করে। এসব শব্দাংশকে উপসর্গ বলে।
বাংলা ভাষার উপসর্গের ধরন
বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত উপসর্গগুলোকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়:
১. খাঁটি বাংলা উপসর্গ
২. সংস্কৃত (তৎসম) উপসর্গ
৩. বিদেশি উপসর্গ
খাঁটি বাংলা উপসর্গ
বাংলা ভাষার নিজস্ব উপসর্গগুলোকে খাঁটি বাংলা উপসর্গ বলা হয়। এদের সংখ্যা ২১টি।
🔹 যেমন:
অ, অনা, আ, আড়, আন, আব, ইতি, ঊন (ঊনা), কু, কদ, নি, পাতি, বি, ভর, রাম, স, সা, সু, হা ইত্যাদি।
উদাহরণ:
সংস্কৃত বা তৎসম উপসর্গ
সংস্কৃত ভাষা থেকে নেওয়া উপসর্গগুলো বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হলে সেগুলোকে তৎসম বা সংস্কৃত উপসর্গ বলা হয়। মোট প্রায় ২০টি।
যেমন:
প্র, পরা, অপ, সম, নি, অনু, অব, নির, দুর, বি, অধি, সু, উৎ, পরি, প্রতি, অতি, অভি, অপি, উপ, আ
উদাহরণ:
-
পরাকাষ্ঠা = পরা (আতিশয্য অর্থে) + কাষ্ঠা
-
অভিব্যক্তি = অভি (ভালভাবে বা সম্পূর্ণরূপে) + ব্যক্ত
-
পরিশ্রান্ত = পরি (সম্যক অর্থে) + শ্রান্ত
বিদেশি উপসর্গ
আরবি, ফারসি, উর্দু বা ইংরেজি ভাষা থেকে কিছু উপসর্গ বাংলায় ব্যবহার হয়ে থাকে। এগুলোর সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়।
উদাহরণ:
-
আরবি উপসর্গ: আম, খাস, লা, গর, বাজে, খয়ের
-
ফারসি উপসর্গ: কার, দর, না, নিম, ফি, বে, বদ, বর, ব, কম
-
উর্দু উপসর্গ: হর
-
ইংরেজি উপসর্গ: হেড, সাব, ফুল, হাফ
বিশেষ দ্রষ্টব্য
আ, সু, বি, নি — এই চারটি উপসর্গ বাংলা ও সংস্কৃত— উভয় ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়।
এইভাবে উপসর্গের ধরণ, উদাহরণসহ সহজ ভাষায় বোঝা যায় এবং মনে রাখাও সহজ হয়।
উৎস: প্রমিত বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি – ড. হায়াৎ মামুদ