ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বামপন্থী রাজনৈতিক দল, যা ১৯৫৭ সালের জুলাই মাসে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে গঠিত হয়। দলের জন্ম প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে তীব্র আদর্শিক মতবিরোধ ছিল। ১৯৫৭ সালের ৬-১০ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের কাগমারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে আওয়ামী লীগ সভাপতি মাওলানা ভাসানী ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মধ্যে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এ বিষয়ে দলের ডানপন্থী অংশ সোহরাওয়ার্দীর অবস্থানকে সমর্থন করে, আর বামপন্থী অংশ মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে স্বাধীন ও জোটনিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি এবং পূর্ব পাকিস্তানের সর্বাধিক স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে অবস্থান নেয়। এর ফলে আওয়ামী লীগ ভেতরে ভেতরে বিভক্ত হয়ে পড়ে এবং একই বছরের ১৮ মার্চ ভাসানী পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
পরে আওয়ামী লীগের বামপন্থী অংশের উদ্যোগে ঢাকার রূপমহল সিনেমা হলে ২৪-২৫ জুলাই গণতান্ত্রিক কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে পাকিস্তান ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) আনুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয়।
-
ন্যাপের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, আর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের মাহমুদুল হক ওসমানী।
-
গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের মধ্যে হাজী মুহাম্মদ দানেশ, অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ, মশিউর রহমান যাদু মিয়া, আবদুল মতিন, ওয়ালি খান প্রমুখ ছিলেন।
উল্লেখযোগ্য যে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জাতীয় পার্টি ও লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) মূলত ডানপন্থী রাজনৈতিক দল, বিপরীতে ন্যাপ বামপন্থী আদর্শে বিশ্বাসী দল হিসেবে আলাদা রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রেখেছে।