নয়া আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রস্তাব জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের কোন বিশেষ অধিবেশন গৃহীত হয়?
A
দ্বিতীয়
B
তৃতীয়
C
পঞ্চম
D
ষষ্ঠ
উত্তরের বিবরণ
নয়া আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা (NIEO): একটি ন্যায্য বৈশ্বিক অর্থনীতির স্বপ্ন
নয়া আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বা New International Economic Order (NIEO) ছিল ১৯৭০-এর দশকে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক ধারণা, যার মূল লক্ষ্য ছিল উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশগুলোর অর্থনৈতিক বৈষম্য কমানো এবং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে তাদের জন্য একটি সমতাভিত্তিক অবস্থান নিশ্চিত করা।
NIEO-এর পটভূমি ও উদ্দেশ্য:
১৯৭০-এর দশকে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় উন্নয়নশীল দেশগুলো বৈষম্যের শিকার হচ্ছিল। ধনী এবং শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর প্রভাবমুক্ত হয়ে এই দেশগুলো তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার জন্য একটি নতুন কাঠামোর প্রয়োজন অনুভব করে। এর প্রেক্ষিতেই NIEO-এর ধারণা জন্ম নেয়। এর মূল উদ্দেশ্যগুলো ছিল:
-
উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বৈশ্বিক সম্পদ ও প্রযুক্তি বণ্টনে ন্যায্যতা নিশ্চিত করা
-
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে উন্নয়নশীল দেশের পণ্যের প্রবেশাধিকার সহজ করা
-
ঋণ ও সাহায্যের ক্ষেত্রে উন্নততর শর্ত প্রদান
-
আন্তর্জাতিক আর্থিক ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গঠনমূলক সংস্কার সাধন
NIEO-এর আনুষ্ঠানিক গ্রহণ:
-
১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৬ষ্ঠ বিশেষ অধিবেশনে NIEO প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।
-
এই অধিবেশনের লক্ষ্য ছিল উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক সমস্যা নিরসন ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক কাঠামোয় তাদের অবস্থান শক্তিশালী করা।
-
জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো এই প্রস্তাবের মাধ্যমে একটি ন্যায্য, ভারসাম্যপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক কাঠামো গঠনের আহ্বান জানায়।
বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ:
যদিও NIEO একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী উদ্যোগ ছিল, তবুও উন্নত দেশগুলোর প্রতিরোধ, রাজনৈতিক বিরোধ, এবং অর্থনৈতিক আধিপত্য ধরে রাখার প্রবণতার কারণে এটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। এর ফলে NIEO বর্তমানে একটি সক্রিয় ব্যবস্থা হিসেবে বিদ্যমান নেই।
বর্তমান প্রাসঙ্গিকতা:
আজকের বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে NIEO-এর ধারণা এবং নীতিমালাগুলো এখনও আলোচনার বিষয়। নৈতিকতা, ন্যায্যতা ও বৈশ্বিক অংশীদারিত্বের মূলনীতি হিসেবে এটি অনেক আন্তর্জাতিক আলোচনা ও নীতিনির্ধারণে প্রভাব বিস্তার করে চলেছে।
উপসংহার:
নয়া আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ছিল একটি যুগান্তকারী চিন্তাধারা, যা উন্নয়নশীল বিশ্বের অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে তৈরি হয়েছিল। যদিও এটি বাস্তবে সম্পূর্ণরূপে রূপায়িত হয়নি, তবুও এর মূল আদর্শ ও লক্ষ্যগুলো আজও একটি ন্যায্য ও সমতাভিত্তিক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক শৃঙ্খলার পথনির্দেশক হিসেবে বিবেচিত হয়।
তথ্যসূত্র: জাতিসংঘের সরকারি ওয়েবসাইট।
0
Updated: 4 months ago
জাতিসংঘ সনদ (UN Charter) কবে কার্যকর হয়?
Created: 3 weeks ago
A
১৪ এপ্রিল, ১৯৪৫
B
২৬ জুন, ১৯৪৫
C
২৪ অক্টোবর, ১৯৪৫
D
১০ ডিসেম্বর, ১৯৪৫
জাতিসংঘ সনদ (UN Charter) হলো জাতিসংঘের মূল সংবিধান ও কার্যবিধি, যার মাধ্যমে এই আন্তর্জাতিক সংস্থার কাঠামো, উদ্দেশ্য ও নীতিমালা নির্ধারিত হয়েছে। এটি বিশ্বের শান্তি, নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার ভিত্তি দলিল হিসেবে বিবেচিত।
-
সনদের রচয়িতা: আর্চিবাল্ড ম্যাকলিশ (Archibald Macleish)
-
মোট অনুচ্ছেদ: ১১১টি
-
অধ্যায়ের সংখ্যা: ১৯টি
-
কার্যকর হয়: ২৪ অক্টোবর, ১৯৪৫
-
ফলে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের গঠন সম্পন্ন হয়
সানফ্রান্সিসকো সম্মেলন সংক্রান্ত তথ্য:
-
১৯৪৫ সালের ২৫ এপ্রিল থেকে ২৬ জুন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো শহরে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
-
এতে ৫০টি দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করে এবং জাতিসংঘ সনদে স্বাক্ষর করে।
-
জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য পোল্যান্ড সানফ্রান্সিসকো সম্মেলনে উপস্থিত না থাকলেও, পরবর্তীতে ১৫ অক্টোবর, ১৯৪৫ তারিখে সনদে স্বাক্ষর করে।
-
তাই পোল্যান্ডকেও জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
-
জাতিসংঘের বর্তমান সদস্যদেশ সংখ্যা ১৯৩টি।
জাতিসংঘ সনদের অধ্যায়সমূহ:
-
অধ্যায় ১ : উদ্দেশ্য ও মূলনীতি
-
অধ্যায় ২ : সদস্যপদ
-
অধ্যায় ৩ : অঙ্গসমূহ
-
অধ্যায় ৪ : সাধারণ পরিষদ
-
অধ্যায় ৫ : নিরাপত্তা পরিষদ
-
অধ্যায় ৬ : বিরোধাদির শান্তিপূর্ণ মীমাংসা
-
অধ্যায় ৭ : শান্তির প্রতি হুমকি, শান্তিভঙ্গ ও আক্রমণাত্মক কার্যাদি সম্পর্কিত ব্যবস্থা
-
অধ্যায় ৮ : আঞ্চলিক ব্যবস্থাসমূহ
-
অধ্যায় ৯ : আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ও সামাজিক সহযোগিতা
-
অধ্যায় ১০ : অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ
-
অধ্যায় ১১ : অস্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল সম্পর্কিত ঘোষণা
-
অধ্যায় ১২ : আন্তর্জাতিক অছি ব্যবস্থা
-
অধ্যায় ১৩ : অছি পরিষদ
-
অধ্যায় ১৪ : আন্তর্জাতিক আদালত
-
অধ্যায় ১৫ : সচিবালয়
-
অধ্যায় ১৬ : বিবিধ ধারাসমূহ
-
অধ্যায় ১৭ : অন্তর্বর্তীকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থাদি
-
অধ্যায় ১৮ : সংশোধনের নিয়মাবলি
-
অধ্যায় ১৯ : অনুমোদন ও স্বাক্ষরদান
0
Updated: 3 weeks ago
'লন্ডন ঘোষণা' নিম্নের কোন সংগঠনের প্রতিষ্ঠার সাথে জড়িত?
Created: 3 weeks ago
A
জাতিসংঘ
B
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা
C
বিশ্বব্যাংক
D
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল
লন্ডন ঘোষণা (London Declaration) হলো জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার প্রথম পদক্ষেপ, যা ১২ জুন ১৯৪১ সালে লন্ডনের সেইন্ট জেমস প্যালেসে দেওয়া হয়।
-
কারণ: জার্মানির ব্রিটেন আক্রমণের পর ইউরোপের ৯টি নির্বাসিত দেশ এবং ৫টি অন্যান্য মিত্র দেশ শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এই ঘোষণা দেয়।
-
বৈঠকে অংশ নেওয়া ১৪টি দেশ: গ্রেট ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, বেলজিয়াম, চেকোস্লোভাকিয়া, গ্রিস, লুক্সেমবার্গ, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, যুগোস্লাভিয়া ও ফ্রান্স
-
ঘোষণার মূল কথা: "To work together, with other free peoples, both in war and in peace"
এই বৈঠকে পাশ হওয়া ৩টি প্রস্তাব:
-
জার্মানি ও ইতালির বিরুদ্ধে যুদ্ধে দেশগুলোর পারস্পারিক সহযোগীতা
-
অক্ষ শক্তিকে পরাজিত করে মিত্রশক্তির দেশগুলো একক কোনো চুক্তি করবে না
-
মিত্র দেশগুলোর সমন্বয়ে বিশ্ব শান্তি ও ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা
উল্লেখ্য: লন্ডন ঘোষণা ছিল কমনওয়েলথ গঠনের প্রথম পদক্ষেপের পাশাপাশি জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার সূচনা।
0
Updated: 3 weeks ago
জাতিসংঘের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য রাষ্ট্র -
Created: 1 month ago
A
৫২টি
B
৫১টি
C
৫০টি
D
৪৯টি
জাতিসংঘ হলো একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা যা বিশ্বের স্বাধীন দেশসমূহকে একত্রিত করে শান্তি, নিরাপত্তা ও সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে। এটি ১ জানুয়ারি ১৯৪২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টের প্রস্তাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। সদর দফতর ম্যানহাটন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থিত এবং এর স্থপতি ছিলেন ডব্লিউ. হ্যারিসন।
• জাতিসংঘ বিশ্বের স্বাধীন দেশসমূহের সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক সংস্থা।
• সদর দপ্তর: ম্যানহাটন, নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র।
• ইউরোপীয় কার্যালয়: জেনেভা, সুইজারল্যান্ড।
• জাতিসংঘ সনদে মোট ১১১টি অনুচ্ছেদ রয়েছে।
• প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যা: ৫১টি।
গঠন সংক্রান্ত তথ্য:
• সনদ কার্যকর হওয়ার তারিখ: ২৪ অক্টোবর ১৯৪৫।
• আটলান্টিক সনদ স্বাক্ষরিত হয়: ১৪ আগস্ট ১৯৪১।
• জাতিসংঘ দিবস পালিত হয়: ২৪ অক্টোবর।
0
Updated: 1 month ago