কোন সাহিত্যকর্মে সান্ধ্যভাষার প্রয়োগ আছে?
A
পদাবলী
B
গীতগােবিন্দ
C
চর্যাপদ
D
চৈতন্যজীবনী
উত্তরের বিবরণ
চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম বৌদ্ধ গান সমূহের একটি। এর ভাষাকে বলা হয় 'সন্ধ্যা' বা 'সান্ধ্য ভাষা', যা কখনও স্পষ্ট এবং কখনও অস্পষ্ট। এজন্য একে 'আলো-আঁধারি ভাষা' ও বলা হয়।
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী এ ভাষা সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন যে, “আলো আঁধারি ভাষা, কতক আলো, কতক অন্ধকার, খানিক বুঝা যায়, খানিক বুঝা যায় না। যাঁহারা সাধন-ভজন করেন, তাঁহারাই সে কথা বুঝিবেন, আমাদের বুঝিয়া কাজ নাই।” চর্যাপদের পদগুলো প্রাচীন কোনো নির্দিষ্ট ছন্দে রচিত কিনা তা নির্ধারণ করা সম্ভব নয়, তবে আধুনিক ছন্দের বিচার অনুযায়ী এগুলো মাত্রাবৃত্ত ছন্দের অধীনে বিবেচিত হয়।
চর্যাপদ বিষয়ক গবেষণার ইতিহাসে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হলো:
-
১৯২০ সালে বিজয়চন্দ্র মজুমদার প্রথম চর্যাপদের ভাষা নিয়ে আলোচনা করেন।
-
১৯২৬ সালে ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় ভাষা নিয়ে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করে স্বীকৃতি দেন যে, চর্যাপদ বাংলা ভাষায় রচিত। তার গ্রন্থ 'অরিজিন অ্যান্ড ডেভলোপমেন্ট অব বেঙ্গলি ল্যাঙ্গুয়েজ'-এ ধ্বনিতত্ত্ব, ব্যাকরণ ও ছন্দ বিশ্লেষণ করে চর্যাপদের বাংলা ভাষার সম্পদ হিসেবে প্রমাণিত হয়। অধিকাংশ ভাষাবিজ্ঞানী এ অভিমত সমর্থন করেন।
-
১৯২৭ সালে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ প্রথমবার চর্যাপদের ধর্মতত্ত্ব বিশ্লেষণ করেন।
-
ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, ড. সুকুমার সেন, এবং ড. শশীভূষণ দাশগুপ্ত চর্যাপদের ভাষা, বিষয়বস্তু প্রভৃতি নিয়ে গবেষণা করে প্রমাণ করেন যে চর্যাপদ বাংলা ভাষায় রচিত।
-
১৯৪৬ সালে ড. শশীভূষণ দাশগুপ্ত চর্যাপদের অন্তর্নিহিত সহজযান তত্ত্বের ব্যাখ্যা প্রদান করেন।
-
বিহারের পণ্ডিত রাহুল সাংকৃত্যায়ন বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য, বৌদ্ধ সহজযান এবং চর্যাগীতিকা নিয়ে ইংরেজি ও হিন্দিতে বিস্তৃত গবেষণা করেছেন।
0
Updated: 1 month ago
"কাআ তরুবর পাঞ্চ বি ডাল।" - চর্যাপদের এই পঙ্ক্তিটিতে “পাঞ্চ বি ডাল” দ্বারা কী বোঝানো হয়েছে?
Created: 1 month ago
A
পঞ্চতত্ত্ব
B
পঞ্চ প্রাণ
C
পঞ্চশর
D
পঞ্চ ইন্দ্রিয়
চর্যাপদের প্রথম পদ —
''কাআ তরুবর পাঞ্চ বি ডালচঞ্চল চীএ পইঠা কাল।'' রচয়িতা লুইপা। আধুনিক বাংলায় এর রূপান্তর:
''কায়া তরুর মত, পাঁচটি তার ডালচঞ্চল চিত্তে কাল প্রবেশ করেছে।।''
-
অন্তর্নিহিত ভাব:
• মানুষকে একটি গাছের সাথে তুলনা করা হয়েছে, যার পাঁচটি শাখা হল পঞ্চ ইন্দ্রিয় (চোখ, কান, নাক, জিহ্বা, ত্বক)।
• এই পাঁচ ইন্দ্রিয় দ্বারা মানুষ দৈনন্দিন বস্তুজগতের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে।
• চর্যাপদের গূঢ় ভাষায়:-
“তরু” = দেহ
-
“ডাল/শাখা” = ইন্দ্রিয়
-
“পাঞ্চ বি ডাল” = দেহের পাঁচটি ইন্দ্রিয়
-
-
লুইপা সম্পর্কিত তথ্য:
• প্রবীণ বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য ও চর্যাপদের কবি।
• মুহম্মদ শহীদুল্লাহ-এর অনুমান: ৭৩০–৮১০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে জীবিত ছিলেন।
• চর্যাপদে দুটি পদ লিখেছেন (১ ও ২৯ নং পদ)।
0
Updated: 1 month ago
কে চর্যাপদ আবিষ্কার করেন?
Created: 1 month ago
A
ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্
B
প্রবোধচন্দ্র বাগচী
C
ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
D
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
চর্যাপদ বাংলা ভাষার প্রথম কাব্যগ্রন্থ বা গানের সংকলন হিসেবে পরিচিত। এটি বাংলা সাহিত্যের আদি যুগের একমাত্র লিখিত নিদর্শন।
-
১৯০৭ সালে ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজ দরবার গ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদ আবিষ্কার করেন।
-
চর্যাপদের চর্যাগুলো রচনা করেন বৌদ্ধ সহজিয়াগণ।
-
চর্যাপদে বৌদ্ধধর্মের বিষয়বস্তু বর্ণিত আছে।
-
চর্যাপদ তিব্বতি ভাষায় অনুবাদ করেন কীর্তিচন্দ্র।
-
১৯৩৮ সালে প্রবোধচন্দ্র বাগচী চর্যাপদের তিব্বতী ভাষার অনুবাদ আবিষ্কার করেন।
উৎস:
0
Updated: 1 month ago
চর্যাপদের ধর্মমত নিয়ে প্রথম আলোচনা করেন কে?
Created: 2 months ago
A
ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
B
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্
C
ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী
D
বিজয়চন্দ্র মজুমদার
চর্যাপদের প্রধান আলোচকগণ:
-
১৯০৭ সালে চর্যাপদ আবিষ্কারের পর অনেক পণ্ডিত চর্যাপদ ও এর বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করেন।
-
বিজয়চন্দ্র মজুমদার – ১৯২০ সালে চর্যাপদের ভাষা নিয়ে প্রথম আলোচনা করেন।
-
ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী – চর্যাপদের তিব্বতি অনুবাদ আবিষ্কার করেন এবং ১৯৩৮ সালে প্রকাশ করে চর্যার জট উন্মোচন করেন।
-
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ – ১৯২৭ সালে চর্যাপদের ধর্মতত্ত্ব নিয়ে প্রথম আলোচনা করেন এবং ১৯৪২ সালে চর্যাপদের সঠিক পাঠ নির্ণয় করে আলোচনার পথ সহজ করেন।
-
ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত – ১৯৪৬ সালে চর্যাগীতির অন্তর্নিহিত তত্ত্বের ব্যাখ্যা প্রকাশ করেন।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম
0
Updated: 2 months ago