বাংলা আদি অধিবাসীগণ কোন ভাষাভাষী ছিলেন?
A
বাংলা
B
সংস্কৃত
C
হিন্দি
D
অস্ট্রিক
উত্তরের বিবরণ
বাংলা ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা-গোষ্ঠীর অন্তর্গত এবং নব্য-ভারতীয় আর্য ভাষা থেকে উদ্ভূত। এটি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর শতম শাখা থেকে এসেছে। বাংলার আদি জনগোষ্ঠী মূলত অস্ট্রিক ভাষাভাষী ছিল।
ভারতীয় উপমহাদেশের আঞ্চলিক ভাষাগুলোর প্রাথমিক উৎস অ-আর্য ভাষা। আর্যদের ভাষাকে বৈদিক ভাষা বলা হতো এবং বেদের ভাষাকেও বৈদিক ভাষা বলা হয়। বৈদিক ভাষার সংস্কারজাত নতুন ভাষা হল সংস্কৃত, যার শব্দ হিসেবে উল্লেখ প্রথম পাওয়া যায় মহাকাব্য রামায়ণে।
বাংলার নিকটতম আত্মীয় ভাষা হলো অহমিয়া ও ওড়িয়া। ধ্রুপদী ভাষা ও পালির সঙ্গে বাংলার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়। ভাষা উৎপত্তি বিষয়ে গবেষকদের মধ্যে দুইটি প্রধান মতামত বিদ্যমান:
-
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ: বাংলা এসেছে গৌড়ি প্রাকৃত থেকে, যা গৌড়ি অপভ্রংশ হয়ে বঙ্গ-কামরুপির মাধ্যমে বাংলা ভাষায় রূপান্তরিত হয়েছে।
-
ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়: বাংলা এসেছে মাগধী প্রাকৃত থেকে, যা মাগধী অপভ্রংশ হয়ে বাংলা ভাষায় এসেছে।
ভাষা গবেষকরা সাধারণত ড. শহীদুল্লাহর মতামতকে অধিক গ্রহণযোগ্য মনে করেন এবং অন্যান্য পণ্ডিতগণও এই মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। বাংলার ইতিহাসকে তিনটি ঐতিহাসিক পর্যায়ে ভাগ করা হয়:
-
প্রাচীন বাংলা: ৯০০/১০০০–১৩৫০ খ্রিস্টাব্দ, যার প্রধান লিখিত নিদর্শন চর্যাগীতি।
-
মধ্য বাংলা: ১৩৫০–১৮০০ খ্রিস্টাব্দ।
-
আধুনিক বাংলা: ১৮০০-এর পরবর্তী সময়।
0
Updated: 1 month ago
'সুনামীর তান্ডবে অনেকেই সর্বশান্ত হয়েছে।'- বাক্যটিতে কয়টি ভুল আছে?
Created: 4 weeks ago
A
একটি
B
দুটি
C
তিনটি
D
ভুল নেই
প্রদত্ত বাক্যে তিনটি শব্দের বানান ভুল ছিল। সুনামী, তান্ডব, সর্বশান্ত এর সঠিক রূপ হলো সুনামি, তাণ্ডব, সর্বস্বান্ত। সঠিক বাক্যটি হবে: সুনামির তাণ্ডবে অনেকেই সর্বস্বান্ত হয়েছে।
-
সুনামি (বিশেষ্য): শব্দের উৎস জাপানি ভাষা। অর্থ:
-
সমুদ্রগর্ভে তীব্র ভূকম্পন বা অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সমুদ্র উপকূলকে প্লাবিত করে এমন প্রবল জলোচ্ছ্বাস।
-
ইংরেজিতে বলা যায় a powerful sea wave caused by undersea earthquake or volcanic eruption।
-
বেলোর্মি।
-
-
তাণ্ডব (বিশেষ্য): শব্দের উৎস সংস্কৃত ভাষা। অর্থ:
-
তণ্ডুমুনি-উদ্ভাবিত নৃত্য, উদ্যম নৃত্য, বিশেষত শিবের নৃত্য।
-
আলংকারিক অর্থ: প্রলয়ংকর বা ধ্বংসাত্মক ব্যাপার।
-
ইংরেজিতে বলা যায় frenzied dance, especially of Lord Shiva; metaphorically a destructive force।
-
-
সর্বস্বান্ত (বিশেষণ): শব্দের উৎস সংস্কৃত ভাষা। অর্থ:
-
সব সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে এমন।
-
ইংরেজিতে বলা যায় utterly ruined or destitute, having lost everything।
-
0
Updated: 4 weeks ago
সংবাদপত্রে প্রকাশের জন্য নিখোঁজ সংবাদ কোন ধরনের পত্র?
Created: 1 month ago
A
বিজ্ঞপ্তি
B
অভিযোগ পত্র
C
চুক্তিপত্র
D
প্রতিবেদন
প্রতিবেদন - প্রতিবেদন হচ্ছে কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের তথ্য ভিত্তিক বর্ণনা। চুক্তিপত্র - অংশিদারী প্রতিষ্ঠানের চুক্তির বিষয়বস্তু যে দলিলে লিপিবদ্ধ থাকে, তাকে চুক্তিপত্র বলে অভিযোগপত্র - অভিযোগ লেখা থাকে যে পত্রে। বিজ্ঞাপন - বিশেষভাবে জানা বা জ্ঞাপন, সংবাদপত্রের শিরোনাম
0
Updated: 1 month ago
চর্যাপদের খণ্ডিত পদগুলো তিব্বতি থেকে প্রাচীন বাংলায় রূপান্তর করেন-
Created: 2 weeks ago
A
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
B
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
C
রাজেন্দ্রলাল মিত্র
D
সুকুমার সেন
চর্যাপদ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃত, যা ৮ম থেকে ১২শ শতাব্দীর মধ্যে রচিত বৌদ্ধ সহজিয়া সাধকদের গীতিকবিতা। এই পদগুলি প্রাচীন বাংলা, মৈথিলি, ওড়িয়া ও অসমীয়ার মিশ্রভাষায় রচিত। চর্যাপদের পাণ্ডুলিপি প্রথম আবিষ্কৃত হয় তিব্বতে, এবং সেখানে এগুলোর তিব্বতি অনুবাদ ও টীকা পাওয়া যায়।
তিব্বতি অনুবাদ থেকে চর্যাপদের খণ্ডিত পদগুলো (২৩, ২৪, ২৫ ও ৪৮ নং) প্রাচীন বাংলায় রূপান্তর করেন সুকুমার সেন। এই তথ্য অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্ত গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে। প্রবোধচন্দ্র বাগচী ১৯৪২ সালে চর্যাপদের তিব্বতি অনুবাদ প্রকাশ করেন, আর সেই অনুবাদকে ভিত্তি করে সুকুমার সেন তাঁর চর্যাগীতি পদাবলী গ্রন্থে এই পদগুলির মূল পাঠ অনুমান করে উপস্থাপন করেন।
প্রেক্ষাপট অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমূহ
-
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে নেপালের রাজদরবারের গ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদের পাণ্ডুলিপি আবিষ্কার করেন। তবে সেখানে ২৩-এর খণ্ডিত, ২৪, ২৫ এবং ৪৮ নম্বর পদ অনুপস্থিত ছিল।
-
অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখ করেন যে মূল পুথির চারটি পাতা লুপ্ত হয়েছে, ফলে উক্ত পদগুলির মূল পাঠ হারিয়ে যায়।
-
প্রবোধচন্দ্র বাগচী তিব্বতি অনুবাদ আবিষ্কার করে ১৯৪২ সালে তা প্রকাশ করেন।
-
সুকুমার সেন সেই অনুবাদের ওপর ভিত্তি করে প্রাচীন বাংলায় রূপান্তর করেন।
অপশনগুলোর বিশ্লেষণ
-
ক) সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়: ভুল। তিনি চর্যাপদের ভাষা বিশ্লেষণ করে প্রাচীন বাংলা হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন, কিন্তু তিব্বতি অনুবাদ থেকে রূপান্তর করেননি।
-
খ) হরপ্রসাদ শাস্ত্রী: ভুল। তিনি চর্যাপদ আবিষ্কার করেন, কিন্তু তিব্বতি অনুবাদের কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না।
-
গ) রাজেন্দ্রলাল মিত্র: ভুল। তিনি চর্যাপদ আবিষ্কারের পূর্বেই মৃত্যুবরণ করেন এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন না।
-
ঘ) সুকুমার সেন: সঠিক। তিনিই তিব্বতি অনুবাদ অবলম্বনে চর্যাপদের খণ্ডিত পদগুলো প্রাচীন বাংলায় রূপান্তর করেন।
চর্যাপদ সম্পর্কিত অতিরিক্ত তথ্য
-
এটি বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনযুগের একমাত্র নিদর্শন, যার অন্য নাম চর্যাচর্যবিনিশ্চয় বা চর্যাগীতি।
-
পদ সংখ্যা: মোট ৫০টি, তবে সুকুমার সেনের মতে ৫১টি।
-
উদ্ধারকৃত পদ: সাড়ে ৪৬টি।
-
বিলুপ্ত পদ: প্রায় সাড়ে ৩টি (২৩, ২৪, ২৫ ও ৪৮ নং পদ)।
-
২৩নং পদ: ভুসুকুপা রচিত; আংশিকভাবে প্রাপ্ত।
-
২৪নং পদ: কাহ্নপা রচিত; অনুপস্থিত।
-
২৫নং পদ: তন্ত্রীপা রচিত; অনুপস্থিত।
-
৪৮নং পদ: কুক্কুরীপা রচিত; অনুপস্থিত।
-
তিব্বতি অনুবাদক: কীর্তিচন্দ্র।
-
তিব্বতি অনুবাদের আবিষ্কারক: প্রবোধচন্দ্র বাগচী (১৯৩৮)।
-
সংস্কৃত ভাষ্যকার: মুনিদত্ত; তিনি ১১ নম্বর পদের ব্যাখ্যা করেননি।
0
Updated: 2 weeks ago