‘আমার সোনার বাংলা’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত এক অনন্য দেশাত্মবোধক সঙ্গীত, যা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে স্বীকৃতি পায়। এটি বাঙালির জাতীয় চেতনা, দেশপ্রেম ও মাতৃভূমির প্রতি গভীর অনুরাগের প্রতীক।
প্রকাশ ও প্রেক্ষাপট:
-
গানটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৩১২ বঙ্গাব্দে (১৯০৫ খ্রিস্টাব্দ) ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকায়।
-
এটি রচিত হয়েছিল ব্রিটিশদের বঙ্গভঙ্গ প্রক্রিয়ার বিরোধিতা জানাতে। বঙ্গভঙ্গের সময় বাঙালির হৃদয়ে যে দেশপ্রেমের ঢেউ উঠেছিল, এই গান সেই আবেগের এক সজীব প্রকাশ।
-
‘আমার সোনার বাংলা’ সঙ্গীতটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্বদেশ পর্যায়ের গান, যেখানে মাটির টান, প্রকৃতিপ্রেম ও মাতৃভূমির প্রতি ভক্তি একত্রে মিশে আছে।
সঙ্গীতের বৈশিষ্ট্য ও তাৎপর্য:
-
এই গানের প্রথম ১০ পঙ্ক্তি বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গৃহীত হয়েছে।
-
গানটি রবীন্দ্রনাথের ‘গীতবিতান’-এর স্বরবিতান অংশে অন্তর্ভুক্ত।
-
গানের সুর করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে, তবে এতে বাউল গগন হরকরা-এর জনপ্রিয় গান “আমার মন যে করে আয় রে উড়ু উড়ু”-এর সুরের প্রভাব বিদ্যমান।
-
এই গান বাংলার প্রকৃতি, মাটি, ধানক্ষেত, নদী ও বাতাসের মধ্য দিয়ে এক স্নিগ্ধ দেশপ্রেমের আবহ সৃষ্টি করে।
অতএব, ‘আমার সোনার বাংলা’ কেবল একটি দেশাত্মবোধক গান নয়, এটি বাঙালির স্বাধীনতা, ঐক্য ও মাতৃভূমির প্রতি অনন্ত ভালোবাসার প্রতীক।