A
সংস্কৃত
B
পালি
C
প্রাকৃত
D
অপ্রভ্রংশ
উত্তরের বিবরণ
বাংলা ভাষা হলো বাঙালি জনগোষ্ঠীর মনের ভাব প্রকাশের প্রধান মাধ্যম। এই ভাষাটি একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও দীর্ঘ বিবর্তনের ধারায় গঠিত।
ভাষা পরিবারের দৃষ্টিকোণ থেকে
বিশ্বের ভাষাগুলো মূলত কয়েকটি ভাষা-পরিবারে বিভক্ত। বাংলা ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এই পরিবারে অন্তর্ভুক্ত অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ভাষাগুলো হলো:
-
ইংরেজি
-
জার্মান
-
ফরাসি
-
হিস্পানি
-
রুশ
-
পর্তুগিজ
-
ফারসি
-
হিন্দি
-
উর্দু
-
নেপালি
-
সিংহলি
বাংলা ভাষার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ আত্মীয় ভাষা দুটি হলো:
-
অহমিয়া (আসামি)
-
ওড়িয়া
বিবর্তনের ধারা
বাংলা ভাষার উৎপত্তি ও বিকাশ একটি ধাপে ধাপে বিবর্তনের ফল। ভাষাটির ইতিহাস নিম্নোক্ত স্তরগুলো অতিক্রম করে গঠিত হয়েছে:
ইন্দো-ইউরোপীয় → ইন্দো-ইরানীয় → ভারতীয় আর্য → প্রাকৃত → বাংলা
এই ধারায় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো পূর্ব ভারতীয় প্রাকৃত ভাষা, যার ভেতর থেকেই বাংলা ভাষার জন্ম হয়েছে।
জন্ম ও লিখিত রূপ
-
বাংলা ভাষার জন্ম আনুমানিক এক হাজার বছর পূর্বে।
-
বাংলা ভাষার প্রাচীনতম লিখিত নিদর্শন হলো:
চর্যাপদ, যা একটি গীতিকবিতা সংগ্রহ এবং মধ্যযুগীয় বৌদ্ধ সাধকদের রচিত।
উৎস: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি, নবম-দশম শ্রেণি (২০২২ সংস্করণ)।

0
Updated: 1 month ago
শব্দার্থ অনুসারে বাংলা ভাষার শব্দ সমষ্টিকে ভাগ করা যায়-
Created: 1 month ago
A
দুই ভাগে
B
তিন ভাগে
C
চার ভাগে
D
পাঁচ ভাগে
বাংলা ভাষার শব্দসমূহকে অর্থভিত্তিক তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে: যৌগিক শব্দ, রূঢ় শব্দ, এবং যোগরূঢ় শব্দ। এই শ্রেণিবিন্যাস ভাষার গভীরতা ও বৈচিত্র্য বোঝার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১. যৌগিক শব্দ
যেসব শব্দে উপসর্গ, মূল শব্দ এবং প্রত্যয়ের অর্থ একত্রে মিলিয়ে পরিণত শব্দের অর্থ স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়, সেগুলোকে যৌগিক শব্দ বলা হয়।
বৈশিষ্ট্য:
-
মূল শব্দ ও প্রত্যয়ের অর্থ মিলেই পূর্ণ শব্দের অর্থ গঠিত হয়।
উদাহরণ:
-
কর্তব্য = কৃ (করা) + তব্য (যোগ্য) → অর্থ: যা করা উচিত
-
বাবুয়ানা = বাবু + আনা → অর্থ: যিনি বাবুর মতো আচরণ করেন
২. রূঢ় বা রূঢ়ী শব্দ
যেসব শব্দ তাদের গঠন অনুযায়ী কোনো নির্দিষ্ট অর্থ প্রকাশ না করে ভাষাচর্চায় সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়, সেগুলো রূঢ় শব্দ নামে পরিচিত।
বৈশিষ্ট্য:
-
গঠন অনুযায়ী প্রত্যাশিত অর্থ নয়, বরং ব্যবহারিক বা প্রথাগত অর্থ বহন করে।
উদাহরণ:
-
সন্দেশ: প্রকৃত অর্থ ‘সংবাদ’, অথচ এখন ব্যবহৃত হয় ‘মিষ্টান্ন’ হিসেবে।
-
চিকন: মূল অর্থ ‘চকচকে’, বর্তমান ব্যবহারে বোঝায় ‘সরু’।
৩. যোগরূঢ় শব্দ
যেসব শব্দ সমাসবদ্ধ হলেও তারা মূল শব্দ বা ব্যাসবাক্যের অর্থ প্রকাশ না করে একেবারে নতুন অর্থে ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে বলা হয় যোগরূঢ় শব্দ।
বৈশিষ্ট্য:
-
মূল শব্দ দুটি পৃথক অর্থ প্রকাশ করলেও একত্রে নতুন ও আলাদা একটি ধারণা প্রকাশ করে।
উদাহরণ:
-
জলদ = জল + দ (দাতা) → প্রকৃত অর্থ: যে জল দেয়, ব্যবহারিক অর্থ: মেঘ
-
পঙ্কজ = পঙ্ক (কাদা) + জ (জন্ম) → প্রকৃত অর্থ: যা কাদায় জন্মে, ব্যবহারিক অর্থ: পদ্মফুল
বাংলা ভাষার শব্দার্থভিত্তিক এই শ্রেণিবিন্যাস ভাষার গঠন ও ব্যবহারিক দিক অনুধাবনে শিক্ষার্থীদের সাহায্য করে। শব্দের উৎস, গঠন ও প্রয়োগ একত্রে বিবেচনা করলেই আমরা এর গভীরতা ও সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে পারি।
উৎস:
মাধ্যমিক বাংলা ২য় পত্র, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।

0
Updated: 1 month ago
রাজা রামমোহন রচিত বাংলা ব্যাকরণের নাম কী?
Created: 1 week ago
A
মাগ্ধীয় ব্যাকরণ
B
গৌড়ীয় ব্যাকরণ
C
মাতৃভাষা ব্যাকরণ
D
ভাষা ও ব্যাকরণ
রামমোহন রায় রচিত বাংলা ভাষার প্রথম ব্যাকরণ গ্রন্থ: ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’
‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’ হলো বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম বাংলা ব্যাকরণ গ্রন্থ, যার রচয়িতা ছিলেন রাজা রামমোহন রায়। এটি ১৮৩৩ সালে প্রকাশিত হয়।
রামমোহন রায় সম্পর্কে কিছু তথ্য:
রামমোহন রায় ছিলেন একজন বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক, শিক্ষাবিদ এবং ধর্ম সংস্কারক। তিনি বাংলার প্রথম ব্যাকরণ গ্রন্থ রচনা করেন,
যা বাংলা ভাষার উন্নয়নে এক যুগান্তকারী অবদান রেখেছে। তাঁর ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’ বাংলা ভাষায় প্রথম ভাষাবিজ্ঞান গ্রন্থ হিসেবে গণ্য। এছাড়াও, সতীদাহ প্রথার বিরুদ্ধে তিনি প্রবল আন্দোলন চালিয়ে তা বন্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
তাঁর গুরুত্বপূর্ণ রচনাসমূহ:
-
বেদান্ত গ্রন্থ
-
বেদান্তসার
-
পথ্য প্রদান
-
গোস্বামীর সহিত বিচার (যা সতীদাহ প্রথার অসঙ্গতির বিষয় তুলে ধরে)
তথ্যের উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর এবং বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 week ago
বাংলা ভাষায় প্রথম ব্যাকরণ রচনা করেন কে?
Created: 5 days ago
A
অক্ষয় দত্ত
B
মার্শম্যান
C
ব্রাশি হ্যালহেড
D
রাজা রামমোহন
গৌড়ীয় ব্যাকরণ ও রাজা রামমোহন রায়
গৌড়ীয় ব্যাকরণ
রামমোহন রায়ের লেখা ‘গৌড়ীয় ব্যাকরণ’ হলো বাংলা ভাষায় লেখা প্রথম বাংলা ব্যাকরণ গ্রন্থ। এটি তিনি ১৮৩৩ সালে প্রকাশ করেন, যা তাঁর জীবনের শেষ রচিত গ্রন্থও। এর আগে তিনি ইংরেজিতে “Bengali Grammar in the English Language” নামে আরেকটি ব্যাকরণ গ্রন্থ লেখেন।
এই বইটিতে বাংলা ভাষার ধ্বনি (শব্দের ধ্বনিগত গঠন), বর্ণ, উচ্চারণ, শব্দ গঠন, অক্ষর ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এটি মোট ১২টি অধ্যায়ে ভাগ করা। প্রথম অধ্যায়ে মৌলিক ধ্বনি ও উচ্চারণের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
পরবর্তী অধ্যায়গুলোতে বাংলা ভাষার লিঙ্গ, প্রত্যয়, বাক্য গঠন, পদান্বয় এবং ছন্দ নিয়ে আলোচনা রয়েছে।
রামমোহন রায় বাংলা ভাষার স্বতন্ত্র উচ্চারণ-পদ্ধতি নিয়ে নিজস্ব কিছু মূল্যবান মত দিয়েছেন, যা আজও গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত।
এই বইতে বাংলা ভাষার ধ্বনি ও রূপ (গঠনগত দিক) এর বিশ্লেষণভিত্তিক ব্যাকরণিক আলোচনা পাওয়া যায়।
রাজা রামমোহন রায়
রাজা রামমোহন রায়কে বাংলা নবজাগরণের পথপ্রদর্শক বা আদি পুরুষ বলা হয়। তিনি ১৭৭২ সালের ২২ মে হুগলির রাধানগর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
১৮৩০ সালে মুঘল সম্রাট দ্বিতীয় আকবর তাঁকে “রাজা” উপাধি দেন এবং তাঁকে ব্রিটিশ শাসক ও পার্লামেন্টে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠান।
তিনি ১৮২৮ সালের ২০ আগস্ট কলকাতায় প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুরের সহযোগিতায় ‘ব্রাহ্মসমাজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। সমাজ সংস্কারের পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকতাও করেছেন। “শিব প্রসাদ রায়” নামে তিনি একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করতেন।
রামমোহন রায় প্রায় ৩০টি গ্রন্থ রচনা করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনাগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
বেদান্তগ্রন্থ
-
বেদান্তসার
-
ভট্টাচার্যের সহিত বিচার
-
গোস্বামীর সহিত বিচার
-
সহমরণ বিষয়ক প্রবর্তক ও নিবর্তকের সম্বাদ
-
গৌড়ীয় ব্যাকরণ
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 5 days ago