'আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে' লাইনটি নিম্নোক্ত একজনের কাব্যে পাওয়া যায়-
A
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
B
ভারতচন্দ্র রায়
C
মদনমোহন তর্কালঙ্কার
D
কামিনী রায়
উত্তরের বিবরণ
অন্নদামঙ্গল কাব্য ও ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে’ পঙক্তির ব্যাখ্যা
বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগে রচিত এক গুরুত্বপূর্ণ মঙ্গলকাব্য হলো অন্নদামঙ্গল, যার রচয়িতা ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর। তিনি বাংলা সাহিত্যের প্রথম নাগরিক কবি হিসেবে পরিচিত। এই কাব্যে মানবজীবনে দেবীর কৃপা, ধর্ম ও সামাজিক নীতির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
অন্নদামঙ্গল কাব্যটি তিনটি খণ্ডে বিভক্ত:
-
শিবনারায়ণ খণ্ড
-
কালিকামঙ্গল খণ্ড
-
মানসিংহ-ভবানন্দ খণ্ড
এই কাব্যের গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলোর মধ্যে রয়েছেন: মানসিংহ, ভবানন্দ, বিদ্যাসুন্দর, মালিনী, ও ঈশ্বরী পাটনী।
ঈশ্বরী পাটনী ছিলেন ভবানন্দের স্ত্রী, যিনি মাতা হিসেবে সন্তানকে নিয়ে গভীর মমতাভরে একটি প্রার্থনা করেন। তাঁর মুখ দিয়ে ভারতচন্দ্র উচ্চারণ করেন এক বিখ্যাত পঙক্তি—
"আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।"
এই সরল অথচ হৃদয়স্পর্শী বাক্যটি বাঙালি মাতৃত্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এখানে একজন মা তাঁর সন্তানের জন্য প্রার্থনা করছেন যাতে সন্তান ক্ষুধার কষ্ট না পায়—দুধ আর ভাত যেন তার জীবনে অবারিত থাকে।
এই কাব্যের কয়েকটি স্মরণীয় পঙক্তি হলো:
-
“মন্ত্রের সাধন কিংবা শরীর পাতন।”
-
“নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়?”
-
“আমার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে।”
এই পঙক্তিগুলি কেবল কাব্যিক সৌন্দর্যের নিদর্শনই নয়, বরং সমাজ, ধর্ম ও মানবিক মূল্যবোধের পরিচায়ক হিসেবেও বিবেচিত হয়।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 3 months ago
’গীতাঞ্জলি’ কী ধরনের রচনা?
Created: 6 hours ago
A
নাট্যগ্রন্থ
B
কাব্যগ্রন্থ
C
প্রবন্ধগ্রন্থ
D
উপন্যাস
গীতাঞ্জলি:
-
গীতাঞ্জলি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত অন্যতম কাব্যগ্রন্থ।
-
বাংলা গীতাঞ্জলি (রচনাকাল: ১৯০৮–১৯০৯) কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ হলো The Song Offerings।
-
ইংরেজি ভাষায় গদ্যে প্রকাশিত এটি রবীন্দ্রনাথের প্রথম সংকলনগ্রন্থ।
-
১৯১২ সালের শেষ দিকে, লন্ডনের ইন্ডিয়া সোসাইটি কর্তৃক প্রথমবার ‘Gitanjali / The Song Offerings’ প্রকাশিত হয়।
-
১৯১৩ সালের ১০ নভেম্বর গীতাঞ্জলির জন্য রবীন্দ্রনাথকে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়।
-
এই স্বীকৃতির ফলে রবীন্দ্রনাথের কবিপ্রতিভা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি অর্জন করে।
-
The Song Offerings গ্রন্থের আন্তরিক ও প্রশস্তিপূর্ণ ভূমিকা লিখেছেন খ্যাতনামা আইরিশ কবি ডব্লিউ. বি. ইয়েটস (William Butler Yeats)।
-
ভূমিকার পাশাপাশি তিনি রথেনস্টেইন অঙ্কিত কবির একটি পেন্সিল স্কেচও সংযোজন করেন।
-
রবীন্দ্রনাথ গীতাঞ্জলি / The Song Offerings গ্রন্থটি ডব্লিউ. বি. ইয়েটসকে উৎসর্গ করেন।

0
Updated: 6 hours ago
আলাওলের 'তোহফা' কোন ধরনের কাব্য?
Created: 1 month ago
A
আত্মজীবনী
B
প্রণয়কাব্য
C
নীতিকাব্য
D
জঙ্গনামা
তোহফা কাব্য
-
‘তোহফা’ কবি আলাওলের পঞ্চম কাব্য। এটি মূলত বিখ্যাত সুফী সাধক শেখ ইউসুফ গদা দেহলভীর ফারসি গ্রন্থ ‘তোহফাতুন নেসায়েহ্’-এর বাংলা অনুবাদ।
-
আলাওল এই কাব্য ১৬৬৪ সালে রচনা সম্পন্ন করেন। সেই সময় নিজের অবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, তিনি ছিলেন দুর্ভাগ্যপীড়িত ও বৃদ্ধ।
-
কাব্যটি ধর্মীয় জ্ঞান ও নৈতিক উপদেশে পরিপূর্ণ। এটি আরাকানের শ্রীমন্ত সোলেমানের আদেশে রচিত হয়েছিল।
-
যদিও এটি কাব্যরূপে লেখা, মূলত এতে ধর্মীয় নীতিকথাই প্রকাশ পেয়েছে।
-
এই কাব্য ৪৫টি অধ্যায়ে বিভক্ত। এতে মুসলমানদের ধর্মীয় আচার-আচরণ, করণীয় ও সামাজিক জীবনযাত্রা বিষয়ে আলোচনা রয়েছে।
-
তৌহিদ, ঈমান, জ্ঞান, শরিয়ত, এবাদত, বিবাহ প্রভৃতি বিষয় পয়ার ছন্দে উপস্থাপন করে কবি আলাওল এটিকে মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থ হিসেবে মর্যাদা দেন।
কবি আলাওল
-
আলাওল ছিলেন ১৭শ শতকের একজন বিখ্যাত মুসলিম কবি এবং আরাকান রাজসভার প্রধান কবি।
-
তিনি প্রথম জীবনে আরাকান রাজা উমাদারের দেহরক্ষী অশ্বারোহী হিসেবে কাজ করতেন।
-
তাঁর প্রথম ও শ্রেষ্ঠ কাব্য ‘পদ্মাবতী’, যা তিনি মাগন ঠাকুরের উৎসাহে লেখেন। এটি মালিক মুহম্মদ জায়সির হিন্দি কাব্য ‘পদুমাবৎ’-এর অনুবাদ।
আলাওলের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থসমূহ
-
পদ্মাবতী
-
সিকান্দার নামা
-
তোহফা
-
সপ্তপয়কর
-
সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল
-
রাগতালনামা
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস – ড. মাহবুবুল আলম

0
Updated: 1 month ago
'গোরক্ষ বিজয়' কাব্য কোন ধর্মমতের কাহিনি অবলম্বনে লেখা?
Created: 2 weeks ago
A
শৈবধর্ম
B
বৌদ্ধ সহজযান
C
নাথধর্ম
D
কোনোটি নয়
ষোল শতকে কবি শেখ ফয়জুল্লাহ “গোরক্ষ-বিজয়” নামে প্রথম কাব্য রচনা করেছিলেন। এই কাব্যে নাথগুরুর মাহাত্ম্য এবং নাথধর্মের মহত্ত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
গোরক্ষবিজয় কাব্যগ্রন্থ:
নাথ সাহিত্যধারার মধ্যে “গোরক্ষবিজয়” অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাহিনি। বাংলা ভাষায় এটি সম্পর্কিত প্রায় ১৭টি পুথি সংগৃহীত হয়েছে। এই পুথি সংগ্রাহকরা হলেন:
-
নলিনীকান্ত ভট্টশালী – ১টি পুথি
-
আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ – ৮টি পুথি
-
আলি আহমদ – ৭টি পুথি
-
পঞ্চানন মন্ডল – ১টি পুথি
অনেকগুলো পুথি বর্তমানে খণ্ডিত অবস্থায় আছে। পুথি অনুসারে সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা তিনটি। এর মধ্যে:
-
নলিনীকান্ত ভট্টশালী সম্পাদিত – মীনচেতন
-
আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ সম্পাদিত – গোরক্ষবিজয়
-
পঞ্চানন মন্ডল সম্পাদিত – গোর্খবিজয়
রচনাকাল ও কবি:
গোরক্ষবিজয় কাব্যের লিখিত সময় নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে। ছাড়া, ভণিতায় কবীন্দ্র, ভীমসেন ও শ্যামদাস নামও পাওয়া যায়। তবে নামের সংখ্যাধিক্য অনুযায়ী শেখ ফয়জুল্লাহকে মূল কবি মনে করা হয়; বাকিরা মূলত গায়কের ভূমিকা পালন করেছিলেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 2 weeks ago