বাংলা ভাষার প্রথম কাব্য সংকলন 'চর্যাপদ' -এর আবিষ্কারক-
A
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ
B
ডক্টর সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
C
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
D
ডক্টর সুকুমার সেন
উত্তরের বিবরণ
চর্যাপদ বাংলা ভাষার সর্বপ্রথম কাব্যগ্রন্থ হিসেবে পরিচিত। এটি কেবল বাংলা সাহিত্যের আদি যুগের একমাত্র লিখিত নিদর্শন নয়, বরং এটি গানের সংকলন হিসেবেও বিবেচিত হয়। চর্যাপদের ভাষা প্রাচীন, রূপান্তরমান (আর্ন্ধবঙ্গীয় প্রাকৃতঘেঁষা) এবং এর মূল উপজীব্য ছিল বৌদ্ধ সহজিয়া সাধনার দার্শনিক ও গূঢ় ভাবধারা।
আবিষ্কার ও গুরুত্ব
১৯০৭ সালে বিশিষ্ট পণ্ডিত ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজ দরবার লাইব্রেরি থেকে চর্যাপদের পাণ্ডুলিপি আবিষ্কার করেন।
-
এই পাণ্ডুলিপি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।
পদকর্তা ও সংখ্যা
চর্যাপদে বৌদ্ধ সহজিয়াগণ বিভিন্ন গূঢ় তত্ত্ব তুলে ধরেছেন কবিতার মাধ্যমে।
-
ড. সুকুমার সেন তাঁর ‘বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রথম খণ্ড)’ গ্রন্থে ২৪ জন পদকর্তার নাম উল্লেখ করেছেন। তবে তাঁর মতে চর্যাপদের মোট পদ সংখ্যা ৫১টি, যদিও তিনি নিজের রচিত ‘চর্যাগীতি পদাবলী’ গ্রন্থে ৫০টি পদের উল্লেখ করেন এবং আলোচনা অংশে মুনিদত্তের ৫০টি ব্যাখ্যার কথাও বলেন।
-
অপরদিকে, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ তাঁর সম্পাদিত ‘Buddhist Mystic Songs’ গ্রন্থে ২৩ জন কবির নাম এবং ৫০টি পদের কথা উল্লেখ করেন।
অনুবাদ ও ব্যাখ্যা
চর্যাপদের তিব্বতি ভাষায় অনুবাদ করেন কীর্তিচন্দ্র।
-
১৯৩৮ সালে প্রবোধচন্দ্র বাগচী চর্যাপদের তিব্বতি অনুবাদ আবিষ্কার করেন।
-
সংস্কৃত ভাষায় চর্যাপদের ব্যাখ্যা করেন মুনিদত্ত। তবে তিনি ১১ নম্বর পদের ব্যাখ্যা করেননি।
চর্যাপদ কেবল বাংলা ভাষার শুরুর ধাপেই একটি সাহিত্যিক চিহ্ন নয়, এটি বাঙালির আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক ঐতিহ্যের প্রাচীন প্রমাণও বটে। বৌদ্ধ সহজিয়া সাধনার গভীর অন্তর্দৃষ্টি এই পদগুলোর মধ্যে দিয়ে প্রতিফলিত হয়েছে, যা বাংলা সাহিত্যের গর্ব ও ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।
উৎস:
-
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর
-
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস – মাহবুবুল আলম
-
বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 3 months ago
'তোহফা' কাব্যটি কে রচনা করেন?
Created: 3 weeks ago
A
দৌলত কাজী
B
মাগন ঠাকুর
C
সাবিরিদ খান
D
আলাওল
আলাওল ও তাঁর কাব্যগ্রন্থসমূহ
তোহফা কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা ছিলেন আলাওল।
আলাওল:
-
১৭শ শতক/মধ্যযুগের একজন প্রধান মুসলিম কবি।
-
আরাকান রাজসভার শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে পরিচিত।
-
তাঁর প্রথম ও বিখ্যাত মহাকাব্য হলো ‘পদ্মাবতী’, যা তিনি মাগন ঠাকুরের উৎসাহে রচনা করেছিলেন। এটি মূলত মালিক মুহম্মদ জায়সির হিন্দি কাব্য ‘পদুমাবৎ’ অবলম্বনে রচিত।
-
আলাওল ছিলেন আরাকান-রাজা উমাদারের রাজদেহরক্ষী হিসেবে নিযুক্ত, যিনি অশ্বারোহীর পদে কর্মরত ছিলেন।
আলাওলের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনা:
-
সিকান্দার নামা
-
তোহফা
-
সপ্তপয়কর
-
সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামান
-
রগতালনামা
-
সতীময়ান-লোর-চন্দ্রাণী
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 3 weeks ago
কত সালে 'মেঘনাদবধ কাব্য' প্রথম প্রকাশিত হয়?
Created: 2 weeks ago
A
১৮৬০
B
১৮৬৫
C
১৮৫৯
D
১৮৬১
মেঘনাদবধ কাব্য
-
লেখক: মাইকেল মধুসূদন দত্ত
-
প্রকাশ: ১৮৬১ সালে
-
উৎস: সংস্কৃত মহাকাব্য রামায়ণ থেকে কাহিনি নেওয়া হয়েছে।
-
গঠন: কাব্যটি নয়টি সর্গে বিভক্ত।
-
ঘটনাবলি: কাব্যে তিনদিন ও দুই রাতের ঘটনা বর্ণিত।
-
মূল বিষয়বস্তু: বীরত্ব, অভিমান, আক্ষেপ, ট্রাজেডি ইত্যাদি।
-
নায়ক ও চরিত্র: রাবণকে কেন্দ্র করে ট্রাজেডি সৃষ্টি হয়েছে। কাব্যের প্রধান চরিত্র: রাবণ, মেঘনাদ, লক্ষ্মণ, রাম, প্রমীলা, বিভীষণ, সীতা, সরমা ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর; বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 2 weeks ago
কোনটি কাব্যগ্রন্থ?
Created: 2 months ago
A
শেষ প্রশ্ন
B
শেষ লেখা
C
শেষের কবিতা
D
শেষের পরিচয়
‘শেষলেখা’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষজীবনের এক গভীর আত্মস্মরণ ও দার্শনিক বোধের কাব্যগ্রন্থ। এই গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯৪১ সালে, কবির মৃত্যুর পর। জীবনের অন্তিম প্রহরে রচিত এই কবিতাগুলি যেন তাঁর অন্তরের নীরব প্রতিধ্বনি।
বিষয়টি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এই কারণে যে, এই গ্রন্থের নাম ‘শেষলেখা’ কবি নিজে নির্ধারণ করে যেতে পারেননি। তাঁর মৃত্যুর পর এই নামকরণ করা হয়।
এখানে অন্তর্ভুক্ত অধিকাংশ কবিতা তিনি লিখেছেন মৃত্যুর মাত্র কয়েকদিন আগে, আর কিছু কবিতা রচিত হয়েছিল মুখে মুখে—যার সাক্ষী ছিলেন তাঁর সেবক ও সঙ্গীরা।
এই কাব্যগ্রন্থে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন:
"রূপ-নারায়ণের কূলে,
জেগে উঠিলাম;
জানিলাম এ জগৎ
স্বপ্ন নয়।"
এই কয়েকটি চরণ যেন তাঁর চেতন ও অবচেতন জগতের মিলনবিন্দু, যা তাঁকে জীবনের শেষ মুহূর্তেও আলোর পথে এগিয়ে রাখে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যকর্মে 'শেষ' শব্দটি বহুভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। যেমন:
-
‘শেষ কথা’ — একটি প্রখ্যাত ছোটগল্প, যেখানে সম্পর্ক, সমাজ ও মানবিক দ্বন্দ্ব চিত্রিত হয়েছে।
-
‘শেষের কবিতা’ — একটি দর্শনভিত্তিক উপন্যাস, যেখানে প্রেম, বুদ্ধিবৃত্তি ও আত্মনিরীক্ষার মোহজাল তুলে ধরা হয়েছে।
অন্যদিকে, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘শেষ’ শব্দ ব্যবহার করে লিখেছেন দুটি বিখ্যাত উপন্যাস:
-
‘শেষ প্রশ্ন’ — যেখানে ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রশ্নে টানাপোড়েন তুলে ধরা হয়েছে।
-
‘শেষের পরিচয়’ — একটি সম্পর্কের শেষ ধাপে গঠিত জটিলতার প্রতিচ্ছবি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 2 months ago