কম্পিউটার নেটওয়ার্কে টিপোলজি হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা যা নেটওয়ার্কের কার্যকারিতা এবং পরিচালনার ধরণ নির্ধারণ করে। যখন বিভিন্ন কম্পিউটার, সার্ভার এবং অন্যান্য ডিভাইস একটি নেটওয়ার্কে সংযুক্ত থাকে, তখন তাদের অবস্থান এবং সংযোগের ধরন কে বোঝানোর জন্য "টিপোলজি" শব্দটি ব্যবহার করা হয়। এটি শুধুমাত্র ডিভাইসগুলোর শারীরিক অবস্থান নয়, বরং ডেটা প্রবাহ এবং যোগাযোগের ধরণও নির্দেশ করে। সঠিক টিপোলজি নির্বাচন করা নেটওয়ার্কের কার্যকারিতা, নির্ভরযোগ্যতা এবং সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
নেটওয়ার্ক টিপোলজির মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
-
শারীরিক এবং লজিক্যাল বিন্যাস: শারীরিক টিপোলজি দেখায় কম্পিউটার এবং নেটওয়ার্ক ডিভাইসগুলোর বাস্তব অবস্থান, আর লজিক্যাল টিপোলজি দেখায় ডেটা কিভাবে নেটওয়ার্কের মধ্যে প্রবাহিত হয়।
-
প্রকারভেদ: সাধারণ নেটওয়ার্ক টিপোলজির মধ্যে রয়েছে বাস, রিং, স্টার, মেশ এবং ট্রি টিপোলজি। প্রতিটি টিপোলজির নিজস্ব সুবিধা এবং সীমাবদ্ধতা থাকে। যেমন, স্টার টিপোলজিতে যদি কেন্দ্রীয় হাব ব্যর্থ হয়, তাহলে পুরো নেটওয়ার্ক প্রভাবিত হয়, কিন্তু বাস টিপোলজিতে একটিমাত্র সংযোগ সমস্যা হলে অন্যান্য অংশ কাজ চালিয়ে যেতে পারে।
-
ডেটা প্রেরণ এবং রিসিভ করার পদ্ধতি: টিপোলজি নির্ধারণ করে ডেটা কোন পথে যাবে, কোন ডিভাইস দিয়ে মধ্যবর্তী ট্রান্সমিশন হবে এবং কোন ডিভাইসকে হোস্ট বা কন্ট্রোলার হিসেবে ব্যবহার করা হবে।
-
নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও রক্ষণাবেক্ষণ সহজতা: সঠিক টিপোলজি নির্বাচন করলে নতুন ডিভাইস সংযুক্ত করা বা পুরনো ডিভাইস পরিবর্তন করা সহজ হয়। এছাড়া এটি নেটওয়ার্কের ব্যর্থতা সনাক্তকরণ ও সমাধানেও সহায়ক।
-
দক্ষতা এবং খরচের ওপর প্রভাব: টিপোলজি নেটওয়ার্কের গতি এবং ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের উপর প্রভাব ফেলে। যেমন, মেশ টিপোলজিতে একাধিক ডিভাইস সরাসরি সংযুক্ত থাকায় ডেটা দ্রুত স্থানান্তরিত হয়, কিন্তু খরচ বেশি হয়।
সংক্ষেপে, নেটওয়ার্ক টিপোলজি হলো সেই কাঠামো যা নেটওয়ার্কের ডিভাইসগুলোর অবস্থান, সংযোগ এবং ডেটা প্রবাহের নিয়ম নির্ধারণ করে। এটি নেটওয়ার্ক ডিজাইন এবং ব্যবস্থাপনায় মৌলিক ভূমিকা পালন করে এবং নেটওয়ার্কের কার্যক্ষমতা ও নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করে।
উত্তর হিসেবে সঠিক বিকল্প হলো ঘ) টিপোলজি, কারণ এটি সরাসরি কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ডিভাইসের অবস্থান এবং সংযোগের বিন্যাসকে বোঝায়।