বাংলা সাহিত্যে “কালকূট” নামে পরিচিত কোন লেখক?
A
সমরেশ মজুমদার
B
শওকত ওসমান
C
সমরেশ বসু
D
আলাউদ্দিন আল আজাদ
উত্তরের বিবরণ
বাংলা সাহিত্যে অনেক লেখক তাঁদের লেখার জন্য ছদ্মনাম ব্যবহার করেছেন। যেমন –
-
সমরেশ বসু – লিখেছেন ‘কালকূট’ নামে।
-
প্রমথ চৌধুরী – তাঁর ছদ্মনাম ছিল ‘বীরবল’।
-
প্যারীচাঁদ মিত্র – পরিচিত ছিলেন ‘টেকচাঁদ ঠাকুর’ নামে।
-
সতীনাথ ভাদুড়ী – লিখতেন ‘চিত্রগুপ্ত’ ছদ্মনামে।
-
মণীশ ঘটক – ব্যবহার করেছেন ‘যুবনাশ্ব’ নামটি।
-
বিমল মিত্র – ছদ্মনাম ছিল ‘জাবালি’।
-
বিনয়কৃষ্ণ মুখোপাধ্যায় – লিখতেন ‘যাযাবর’ নামে।
-
সৈয়দ মুজতবা আলী – ব্যবহার করতেন ‘প্রিয়দর্শী’ নাম।
-
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় – লিখতেন ‘নীল লোহিত’ নামে।
এভাবে দেখা যায়, অনেক বিখ্যাত লেখক তাঁদের সাহিত্যিক পরিচয়ে ভিন্ন ভিন্ন ছদ্মনাম গ্রহণ করেছেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 1 month ago
বাংলা সাহিত্যের প্রথম ইতিহাস গ্রন্থ কে রচনা করেন?
Created: 3 months ago
A
সুকুমার সেন
B
দীনেশচন্দ্র সেন
C
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
D
অসিতকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়
বঙ্গভাষা ও সাহিত্য
১৮৯৬ সালে কুমিল্লা থেকে প্রকাশিত ‘বঙ্গভাষা ও সাহিত্য’ গ্রন্থটি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রথম ঐতিহাসিক গ্রন্থ হিসেবে বিশেষ মর্যাদা পায়। দীনেশচন্দ্র সেনের দীর্ঘ গবেষণার ফসল এই বইটি বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় ইতিহাসকে সুশৃঙ্খলভাবে তুলে ধরে।
তথ্য ও বিশ্লেষণের গুণে এটি এক যুগান্তকারী কাজ হিসেবে সমকালীন বিদ্বজ্জন মহলে, এমনকি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছ থেকেও, বিশেষ স্বীকৃতি অর্জন করে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস চর্চায় এই গ্রন্থের মাধ্যমে দীনেশচন্দ্র সেন পথিকৃৎ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন এবং একাধারে পান্ডিত্যের স্বীকৃতি লাভ করেন।
দীনেশচন্দ্র সেন
দীনেশচন্দ্র সেন (১৮৬৬–১৯৩৯) ছিলেন বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ, খ্যাতনামা লোকসাহিত্য বিশারদ ও শিক্ষাবিদ। তাঁর জন্ম হয় ১৮৬৬ সালের ৩ নভেম্বর, মানিকগঞ্জ জেলার বগজুরি গ্রামে মাতুলালয়ে।
১৮৯৬ সাল তাঁর কর্মজীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিয়ে আসে; পুথি সংগ্রহ ও পাঠচর্চার মধ্য দিয়ে তাঁর গবেষণার নবদিগন্ত সূচিত হয়। এই সময় তিনি স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হন।
১৯২০ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য’ বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হলে তিনিই প্রথম বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং টানা বারো বছর অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে সে দায়িত্ব পালন করে ১৯৩২ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
গবেষক হিসেবে যেমন তিনি গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি একজন সৃজনশীল লেখক হিসেবেও তাঁর অবস্থান অগ্রগণ্য। সাহিত্যের ইতিহাস, পৌরাণিক কাহিনি, লোকসাহিত্য সম্পাদনা ও বাঙালির সাংস্কৃতিক ধারার ওপর তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
পাশাপাশি তিনি লিখেছেন কবিতা, উপন্যাস ও গল্পও। সব মিলিয়ে তাঁর রচিত গ্রন্থসংখ্যা ৬০টিরও অধিক। গবেষণা ও সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯২১ সালে তিনি 'রায়বাহাদুর' উপাধিতে ভূষিত হন।
দীনেশচন্দ্র সেনের উল্লেখযোগ্য রচনাসমূহ:
-
History of Bengali Language and Literature
-
বাংলার পুরনারী
-
প্রাচীন বাংলা সাহিত্যে মুসলমানদের অবদান
-
হিন্দু সমাজ ও বৈষ্ণব ধর্ম
-
বীর কথা ও যুগসাহিত্য
-
রামায়ণী কথা
-
কৃত্তিবাসী রামায়ণ
তাছাড়া তিনি সম্পাদনা করেন বিখ্যাত লোকসাহিত্য সংকলন মৈমনসিংহ গীতিকা ও পূর্ববঙ্গ গীতিকা, যা বাংলার লোকঐতিহ্যের ধারক হিসেবে সমাদৃত।
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
'শাশ্বত বঙ্গ' গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
Created: 3 months ago
A
কাজী মোতাহার হোসেন
B
আবুল হুসেন
C
কাজী আবদুল ওদুদ
D
কাজী আনোয়ারুল কাদির
শাশ্বত বঙ্গ
- কাজী আবদুল ওদুদ রচিত ‘শাশ্বত বঙ্গ’ বাংলা ভাষা ও সাহিত্য এবং বাঙালির সাংস্কৃতিক ইতিহাসের বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য একটি গ্রন্থ।
- একটি কবিতাসহ ৭৫টি প্রবন্ধ নিয়ে সংকলিত হয় এ গ্রন্থ।
- গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় বাংলা ১৩৫৮ সনে, কলকাতা থেকে।
- কাজী আবদুল ওদুদ রচিত নবর্পয্যায় (১ম ও ২য় খণ্ড), রবীন্দ্রকাব্য পাঠ, সমাজ ও সাহিত্য, হিন্দু-মুসলমানের বিরোধ, আজকার কথা, নজরুল প্রতিভা, স্বাধীনতা-দিনের উপহার প্রভৃতি গ্রন্থের নির্বাচিত প্রবন্ধ এবং অপ্রকাশিত কিছু প্রবন্ধ নিয়ে গ্রন্থ আকারে ‘শাশ্বত বঙ্গ’ সংকলিত হয়।
--------------------------------
• কাজী আবদুল ওদুদ:
- কাজী আবদুল ওদুদ একজন শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, চিন্তাবিদ।
- তিনি ১৮৯৪ সালের ২৬ এপ্রিল ফরিদপুর জেলার পাংশা উপজেলার বাগমারা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন।
- আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ধারায় কাজী আবদুল ওদুদের প্রধান পরিচয় চিন্তাশীল লেখক হিসেবে। তবে তাঁর লেখালেখি শুরু হয় কথাসাহিত্যের মাধ্যমে।
- তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ মীর পরিবার পাঁচটি গল্পের সংকলন।
- এরপর তিনি তিনটি গল্প রচনা করেন যা পরবর্তী সময়ে তরুণ (১৯৪৮) গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়।
- নদীবক্ষে ও আজাদ (১৯৪৮) তাঁর দু’টি উপন্যাস।
- নাটকও রচনা করেন দু’টি ‘পথ ও বিপথ’ (১৯৩৯) এবং ‘মানব-বন্ধু’। মানব-বন্ধু পরবর্তীকালে তরুণ গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়।
উৎস: বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
মুক্তিযুদ্ধ নির্ভর রচনা কোনটি?
Created: 2 months ago
A
এইসব দিন রাত্রি
B
নূরলদীনের সারা জীবন
C
একাত্তরের দিনগুলি
D
সৎ মানুষের খোঁজে
একাত্তরের দিনগুলি
‘একাত্তরের দিনগুলি’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি স্মৃতিকথা গ্রন্থ, লিখেছেন বাংলাদেশী কথাসাহিত্যিক জাহানারা ইমাম। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে।
জাহানারা ইমাম ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তার পুত্র রুমী ও স্বামীকে হারান। সেই সময় তার জীবন ছিল উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ও ভয়-উদ্বেগে ঘেরা, তবু তার মনে ছিল দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার স্বপ্ন। সেই দুঃসহ নয় মাসের দৈনন্দিন ঘটনা এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে তার কর্মকাণ্ডের বর্ণনা তিনি লিখতেন ছোট চিরকুটে, ছিন্নপত্রে এবং সংকেতভঙ্গিতে।
গ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ার পর জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক একটি মর্মস্পর্শী ও শিহরণ জাগানো সাহিত্যকর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়।
জাহানারা ইমাম
-
জন্ম: ১৯২৯, সুন্দরপুর, মুর্শিদাবাদ জেলা।
-
খ্যাতি: শহীদ জননী নামে পরিচিত।
-
সক্রিয় ভূমিকা: মুক্তিযুদ্ধ চেতনাকে বাস্তবায়ন এবং ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির আহবায়ক।
-
অসুস্থতা ও মৃত্যু: ১৯৮১-এর দিকে মুখের ক্যান্সারে আক্রান্ত, মৃত্যুহয় ১৯৯৪ সালের ২৬ জুন, আমেরিকার মিশিগান স্টেটের ডেট্রয়েটে।
অন্য গ্রন্থসমূহ:
-
সাতটি তারার ঝিকিমিকি
-
অন্যজীবন
-
বুকের ভিতর আগুন
-
নাটকের অবসান
-
নিঃসঙ্গ পাইন
-
প্রবাসের দিনগুলি
-
ক্যানসারের সঙ্গে বসবাস
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম
-
হুমায়ূন আহমেদ: প্রথম ধারাবাহিক নাটক ‘এইসব দিনরাত্রি’, বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে জনপ্রিয়।
-
সৈয়দ শামসুল হক: কাব্যনাট্য ‘নূরলদীনের সারা জীবন’, যা রংপুরের কৃষক বিদ্রোহের নেতা নুরুলদীনের সামন্তবিরোধী সংগ্রামের উপর ভিত্তি করে রচিত।
উৎস: বাংলাপিডিয়া, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 2 months ago