A
চরিত্রহীন
B
গৃহদাহ
C
কৃষ্ণকান্তের উইল
D
সংসপ্তক
উত্তরের বিবরণ
কৃষ্ণকান্তের উইল
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এবং সমকালীন সময়ে বিতর্কিত উপন্যাসগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র বিধবা নারী রোহিণীকে ঘিরে বঙ্কিমচন্দ্র নিজের শিল্পবোধ ও নৈতিক আদর্শের দ্বন্দ্বকে ফুটিয়ে তুলেছেন। ঔপন্যাসিকের জীবদ্দশায় এই গ্রন্থের চারটি সংস্করণ প্রকাশ পেয়েছিল।
উপন্যাসটির প্রধান চরিত্রগুলো হলো:
-
রোহিণী
-
গোবিন্দলাল
-
ভ্রমর
অন্যদিকে,
‘চরিত্রহীন’ উপন্যাসটি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচনা। এর চরিত্রগুলো হলো সতীশ, সাবিত্রী, দিবাকর ও কিরণময়ী।
‘গৃহদাহ’ শরৎচন্দ্রের আরেকটি উল্লেখযোগ্য উপন্যাস, যার চরিত্রগুলো হলো সুরেশ, মহিম ও অচলা।
সংশপ্তক উপন্যাসটি শহীদুল্লাহ কায়সারের লেখা। এতে প্রধান চরিত্রগুলো হলো রাবেয়া খাতুন (রাবু), জাহেদ, সেকেন্দার, মালু, হুরমতি, লেকু, রমজান এবং রামদয়াল।
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়:
১৮৩৮ সালের ২৭ জুন চবিবশ পরগনা জেলার কাঁঠালপাড়া গ্রামে তাঁর জন্ম। তাঁকে বাংলা উপন্যাসের জনক বলা হয়। তাঁর ত্রয়ী উপন্যাস হলো — আনন্দমঠ, দেবী চৌধুরানী এবং সীতারাম। এছাড়া তিনি ‘সাম্য’ নামক গ্রন্থের রচয়িতা।
বঙ্কিমচন্দ্রের অন্যান্য উপন্যাসের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
-
কপালকুণ্ডলা
-
মৃণালিনী
-
বিষবৃক্ষ
-
ইন্দিরা
-
যুগলাঙ্গুরীয়
-
চন্দ্রশেখর
-
রাধারানী
-
রজনী
-
কৃষ্ণকান্তের উইল
-
রাজসিংহ
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।

0
Updated: 2 months ago
মানিক বন্দোপাধ্যায়ের 'পদ্মানদীর মাঝি' নামক উপন্যাসের উপজীব্য-
Created: 2 months ago
A
মাঝি-মাল্লার সংগ্রামশীল জীবন
B
জেলে-জীবনের বিচিত্র সুখ-দুঃখ
C
চাষী-জীবনের করুণ চিত্র
D
চরবাসীদের দুঃখী-জীবন
‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাস
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচিত ‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসটি ১৯৩৪ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ‘পূর্বাশা’ পত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে। এই উপন্যাসের মূল উপজীব্য জেলেদের জীবন ও তাদের সুখ-দুঃখের নানা দিক, বিশেষত পদ্মা নদীর তীরবর্তী ধীবর সম্প্রদায়ের জীবনচিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
কুবের ও কপিলা—এই দুই প্রধান চরিত্রের মধ্যে গড়ে ওঠা সম্পর্ক উপন্যাসে একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। উপন্যাসের বিখ্যাত সংলাপ “আমারে নিবা মাঝি লগে?” কপিলা কুবেরকে উদ্দেশ্য করে বলে, যা পাঠকের মনে গভীর ছাপ ফেলে।
‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাস ইংরেজি, রুশ, চীনা, চেক, নরওয়েজিয়ান, সুইডিশ প্রভৃতি বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
রহস্যময় চরিত্র হোসেন মিয়া
উপন্যাসের অন্যতম রহস্যময় চরিত্র হোসেন মিয়া, যিনি নতুন চরে জীবনের গান শোনাতে আগ্রহী। তিনি একই সঙ্গে নির্মম ও দয়ার্দ্র, সরল ও কঠোর, শ্রমিক ও মাদক ব্যবসায়ী—বিভিন্ন রূপ ধারণ করেছেন। ভালো-মন্দ, আলো-ছায়ার মাঝে ঘেরা হোসেন মিয়া উপন্যাসের অপরিহার্য ও জটিল চরিত্র। যদিও তার প্রকৃত রহস্যের সন্ধান পায় সবাই না, তবুও নিরীহ মাঝিদের কাছে তিনি ত্রাতার মতো সম্মানিত।
উল্লেখযোগ্য চরিত্রসমূহ:
-
কুবের
-
কপিলা
-
মালা
-
ধনঞ্জয়
-
গণেশ
-
শীতলবাবু
-
হোসেন মিয়া
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক। তিনি ১৯০৮ সালের ২৯ মে বিহারের সাঁওতাল পরগনার দুমকা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল ঢাকা জেলার বিক্রমপুরের মালবদিয়া গ্রামে। তাঁর প্রকৃত নাম প্রবোধকুমার, ‘মানিক’ ছিল ডাকনাম।
স্নাতক স্তরে অধ্যয়নরত অবস্থায় বিচিত্রা পত্রিকায় তাঁর প্রথম গল্প ‘অতসী মামী’ প্রকাশ পায়। জীবনের প্রথম পর্যায়ে মনোবিজ্ঞানী ফ্রয়েড, ইয়ুং, অ্যাডলারের প্রভাব পড়লেও পরে তিনি মার্কসবাদে দীক্ষা লাভ করেন।
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য উপন্যাস:
-
জননী
-
দিবারাত্রির কাব্য
-
পুতুলনাচের ইতিকথা
-
শহরতলী
-
অহিংসা
-
স্বাধীনতার স্বাদ
-
আরোগ্য
উৎস:
‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাস; বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।

0
Updated: 2 months ago
'বিষাদ-সিন্ধু' কার রচনা?
Created: 4 weeks ago
A
কায়কোবাদ
B
মীর মশাররফ হোসেন
C
মোজাম্মেল হক
D
ইসমাইল হোসেন সিরাজী
বিষাদ-সিন্ধু’ (১৮৮৫–১৮৯১) হলো বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস আশ্রিত এক অনন্য উপন্যাস, যা লেখক মীর মশাররফ হোসেনকে অসামান্য খ্যাতির আসনে অধিষ্ঠিত করে। কারবালার মর্মান্তিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত এই উপন্যাসে হাসান ও হোসেনের শাহাদাতের করুণ কাহিনি, দামেস্ক শাসক মাবিয়ার পুত্র এজিদের রক্তপিপাসু চরিত্র এবং জয়নাবের রূপে মোহিত হয়ে বহু মানুষের ধ্বংসযজ্ঞ—সবকিছু মিলিয়ে এটি হয়ে উঠেছে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবিক আবেগের এক বিস্ময়কর মহাগাঁথা।
তবে ইতিহাসের প্রতি অন্ধ আনুগত্য নয়, বরং তা থেকে শিল্পসাহিত্যের উপযোগী বেছে নেওয়া কৌশল এই উপন্যাসকে করেছে স্বকীয়। গ্রন্থটি তিনটি পর্বে বিভক্ত:
-
মহরম পর্ব্ব (১৮৮৫)
-
উদ্ধার পর্ব্ব (১৮৮৭)
-
এজিদ-বধ পর্ব্ব (১৮৯১)
এই তিনটি পর্বে রয়েছে মোট ৬৩টি 'প্রবাহ' বা অধ্যায়—যার মধ্যে মহরম পর্বে ২৬টি প্রবাহসহ উপক্রমণিকা, উদ্ধার পর্বে ৩০টি প্রবাহ, এবং এজিদ-বধ পর্বে ৫টি প্রবাহ ও উপসংহার অংশ রয়েছে।
এই উপন্যাসের জনপ্রিয়তার পেছনে মূলত দুটি প্রধান কারণ:
-
ইসলাম ধর্মঘটিত স্পর্শকাতর কাহিনি, যা মুসলিম পাঠকের হৃদয়ে গভীর আবেদন সৃষ্টি করে।
-
সাহিত্যিক গুণ ও শৈলী, যা জ্ঞানপিপাসু ও রসিক পাঠকের কাছে এটিকে একটি শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্মে পরিণত করেছে।
এখানে মাইকেল মধুসূদনের ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ থেকে অনুপ্রাণিত অ্যান্টি-এস্টাব্লিশমেন্ট চেতনার প্রতিফলনও লক্ষণীয়।
মীর মশাররফ হোসেন: পথিকৃৎ মুসলিম সাহিত্যিক
মীর মশাররফ হোসেন জন্মগ্রহণ করেন ১৩ নভেম্বর ১৮৪৭ সালে, কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়া গ্রামে। তিনি ছিলেন ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক—বাংলা গদ্যসাহিত্যের বঙ্কিমযুগের একজন গুরুত্বপূর্ণ লেখক এবং মুসলিম সমাজে সাহিত্যজাগরণের অন্যতম অগ্রদূত।
ছাত্রজীবনেই ‘সংবাদ প্রভাকর’ ও ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’য় সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করে তিনি লেখালেখির সূচনা করেন। তাঁর সাহিত্যগুরু ছিলেন ‘গ্রামবার্তা’র সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ।
তিনি ‘গাজী মিয়াঁ’ ছদ্মনামে লেখালেখি করতেন। সম্পাদনা করেছেন দুটি পত্রিকা—‘আজিজননেহার’ ও ‘হিতকরী’।
প্রথম রচনা:
-
‘রত্নবতী’ (১৮৬৯): এটি বাংলা ভাষায় কোনো মুসলিম লেখকের প্রথম গদ্যগ্রন্থ।
🎭 নাটক:
-
বসন্তকুমারী
-
জমিদার দর্পণ
-
বেহুলা গীতাভিনয়
আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ:
-
গাজী মিয়াঁর বস্তানী
-
আমার জীবনী
-
কুলসুম জীবনী
প্রবন্ধগ্রন্থ:
-
গো-জীবন
এইভাবে মীর মশাররফ হোসেন তাঁর সাহিত্যসাধনায় যেমন ধর্ম ও ইতিহাসকে সৃজনশীল রূপে প্রকাশ করেছেন, তেমনি বাংলা গদ্যসাহিত্যের উন্নয়নে রেখেছেন অমোচনীয় অবদান।
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 4 weeks ago
'কাশবনের কন্যা' কোন জাতীয় রচনা?
Created: 1 week ago
A
নাটক
B
উপন্যাস
C
কাব্য
D
ছোটগল্প
কাশবনের কন্যা
‘কাশবনের কন্যা’ উপন্যাসটি রচনা করেছেন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শামসুদ্দীন আবুল কালাম। গ্রামীণ সমাজ ও জীবনের আবহকে ঘিরে লেখা এই উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৫৪ সালে। এতে লেখক বরিশালের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, গ্রামবাংলার সহজ-সরল মানুষদের জীবন ও সংস্কৃতিকে গভীর দরদের সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন। দারিদ্র্য এবং কষ্টের বাস্তবতা থাকা সত্ত্বেও উপন্যাসে গ্রামকে তুলে ধরা হয়েছে এক বিশ্বাসভিত্তিক শান্তির আশ্রয়স্থল হিসেবে—যেখানে রয়েছে মানবিক সম্পর্কের গভীরতা এবং আত্মিক সুখের অন্বেষণ।
উপন্যাসটিতে বিশেষভাবে চিত্রায়িত হয়েছে বরিশাল অঞ্চলের ভৌগোলিক বৈচিত্র্য, লোকজ সংস্কৃতি এবং গ্রামীণ দিগন্ত। এতে মুখ্য চরিত্র হিসেবে উঠে এসেছে: সিকদার, হোসেন, জোবেদা ও মেহেরজান প্রমুখ।
• শামসুদ্দীন আবুল কালাম
বাংলা কথাসাহিত্যের এক উজ্জ্বল নাম শামসুদ্দীন আবুল কালাম। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯২৬ সালের আগস্ট মাসে, বরিশালের নলছিটি থানার কামদেবপুর গ্রামে। শিক্ষা জীবন শুরু করেন বরিশাল জেলা স্কুলে, যেখানে থেকে তিনি ১৯৪১ সালে ম্যাট্রিক পাশ করেন।
এরপর ১৯৪৩ সালে ব্রজমোহন কলেজ থেকে আই.এ এবং ১৯৪৬ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ ডিগ্রি অর্জন করেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মগুলো হলো:
গল্পগ্রন্থ
-
অনেক দিনের আশা
-
ঢেউ
-
পথ জানা নাই
-
দুই হৃদয়ের তীর
-
শাহের বানু
উপন্যাস
-
আলমনগরের উপকথা
-
কাশবনের কন্যা
-
কাঞ্চনমালা
-
জায়মঙ্গল
-
কাঞ্চনগ্রাম
-
পুঁই ডালিমের কাব্য
তথ্যসূত্র: ‘বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞেসা’ — ড. সৌমিত্র শেখর, ‘বাংলাপিডিয়া’।

0
Updated: 1 week ago