যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্ট্য সমূহ আলোচনা কর।

Shihabur Rahman
যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বৈশিষ্ট্য
সমূহ আলোচনা কর।
ভূমিকা: যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার এমন এক ধরনের শাসনব্যবস্থা যেখানে কেন্দ্রীয়
(ফেডারেল) সরকার ও প্রাদেশিক (রাজ্য) সরকার সমান্তরালভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করে।
এটি মূলত দুটি স্তরের সরকার দ্বারা গঠিত, যেখানে নির্দিষ্ট ক্ষমতা কেন্দ্রীয় সরকারের
হাতে থাকে, আর কিছু ক্ষমতা রাজ্য সরকারের মধ্যে বিভক্ত থাকে। এই ব্যবস্থা গণতন্ত্র,
ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এবং আইনগত ভারসাম্য নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।
যুক্তরাষ্ট্রীয়
সরকারের বৈশিষ্ট্যসমূহ
১.
ক্ষমতার বিভাজন: যুক্তরাষ্ট্রীয়
সরকারে ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে বিভক্ত থাকে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিরক্ষা,
বৈদেশিক নীতি ও মুদ্রানীতি নিয়ন্ত্রণ করে, অন্যদিকে রাজ্য সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা
ও স্থানীয় আইন প্রয়োগ করে। এই ক্ষমতার বিভাজন সরকারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
২.
স্বায়ত্তশাসনের নীতি: যুক্তরাষ্ট্রীয়
শাসনব্যবস্থায় প্রতিটি রাজ্য নির্দিষ্ট পরিমাণ স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে। তারা নিজেদের
আইন, বাজেট এবং প্রশাসনিক নীতি প্রণয়ন করতে পারে, তবে তা অবশ্যই কেন্দ্রীয় সংবিধানের
সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। এটি স্থানীয় সমস্যা সমাধানে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের
সুযোগ প্রদান করে।
৩.
দ্বৈত সরকার ব্যবস্থা: এই
সরকারব্যবস্থায় দুটি শাসনব্যবস্থা পাশাপাশি কাজ করে যেমন; কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য
সরকার। উভয়ের নিজস্ব প্রশাসনিক কাঠামো, আইন ও বিচার ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে, রাষ্ট্রের
বিভিন্ন স্তরে আইন ও নীতিমালা বাস্তবায়ন সহজতর হয়।
৪.
সংবিধান দ্বারা নিয়ন্ত্রিত: যুক্তরাষ্ট্রীয়
সরকার সাধারণত একটি লিখিত সংবিধানের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়। এই সংবিধান রাষ্ট্রের বিভিন্ন
স্তরের সরকারকে সুস্পষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করে এবং তাদের ক্ষমতা, অধিকার ও সীমাবদ্ধতা
নির্ধারণ করে।
৫.
আদালতের ভূমিকা: যুক্তরাষ্ট্রীয়
শাসনব্যবস্থায় বিচারব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুপ্রিম কোর্ট ও অন্যান্য
কেন্দ্রীয় আদালত কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে যে কোনো সাংবিধানিক বিরোধ মীমাংসা
করে এবং আইনগুলোর সাংবিধানিক বৈধতা নিশ্চিত করে।
৬.
রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে সমন্বয়: যুক্তরাষ্ট্রীয়
সরকার ব্যবস্থায় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কেন্দ্রীয় সরকার কিছু ক্ষেত্রে যেমন; অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার
জন্য রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করে।
৭.
বিকেন্দ্রীকরণ নীতি: এই
শাসনব্যবস্থায় রাজ্য সরকারগুলো যেন নিজেদের উন্নয়ন ও নীতি প্রণয়নে স্বাধীনভাবে কাজ
করতে পারে সেজন্য প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করা হয়। এটি গণতন্ত্রকে
সুসংহত করে এবং স্থানীয় প্রশাসনকে কার্যকর করে তোলে।
৮.
নাগরিক অধিকারের সুরক্ষা: যুক্তরাষ্ট্রীয়
সরকারব্যবস্থা নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কেন্দ্রীয়
ও রাজ্য সরকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থার অন্যতম শর্ত হিসেবে, নাগরিকদের বাকস্বাধীনতা,
ধর্মীয় স্বাধীনতা, সমানাধিকার ও আইনের শাসন নিশ্চিত করে।
উপসংহার:
যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার ব্যবস্থা একটি
কার্যকর ও শক্তিশালী শাসন কাঠামো যার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে
ভারসাম্য বজায় থাকে। এটি গণতন্ত্র, ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ এবং আইনের শাসনকে সুসংহত
করে। একটি সফল যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারব্যবস্থা রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন
ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
12
সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবী শ্রেণী বলতে কি বুঝ?

Shihabur Rahman
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কি?

Shihabur Rahman
মরণশীলতা ও প্রজননশীলতা বলতে কি বুঝ?

Shihabur Rahman
উপনিবেশবাদ কি?

Shihabur Rahman
গ্রামীণ সমাজের / সম্প্রদায়ের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট ব্যাখ্যা কর।
