জনমতের মাধ্যমগুলো আলোচনা কর।

Shihabur Rahman
জনমতের মাধ্যমগুলো আলোচনা কর।
ভূমিকা: সাধারণভাবে জনসাধারণের মতমতকেই বলে জনমত। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানে
জনমতকে বিশেষ অর্থে ব্যবহার করা হয়। সমাজের এক বা একাধিক বিষয়ে জনসাধারণের সুস্পষ্ট
মতামতকে জনমত বলে। কোনো সরকার বিশেষ করে গণতান্ত্রিক সরকার জনমতকে উপেক্ষা করে শাসনকার্য
পরিচালনা করতে পারে না। জনমত গঠন ও প্রকাশের ক্ষেত্রে কতগুলো মাধ্যমের ভূমিকা খুবই
গুরুত্বপূর্ণ। এসকল মাধ্যম যদি শক্তিশালী হয় তবে সুস্থ জনমত গঠন করা সম্ভব হয়।
জনমত
গঠনের মাধ্যমসমূহ: গণতন্ত্রের সাফল্যের
মূলভিত্তি হলো সুস্থ ও সুচিন্তিত জনমত। আর এ জনমত প্রকাশের ক্ষেত্রে কতকগুলো মাধ্যমের
ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। যথা নিম্নরূপ;
১.
পরিবার: মানুষের ক্ষেত্রে জনমতের প্রথম বাহন
হলো পরিবার। পরিবারে মানুষ প্রথম বাবা, মা, ভাই বোনের মতাদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হয়।
এ প্রভাব ভবিষ্যতে রাজনৈতিক মতামত গঠনের ক্ষেত্রে কার্যকর হয়। প্রকৃত অর্থে পরিবার
থেকেই ব্যক্তি প্রথম বিভিন্ন মূল্যবোধ সম্পর্কে ধারণা লাভ করে।
২.
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান: জনমত গঠনে শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে মূল আলোচনার
পাশাপাশি আরো অনেক বিষয়ে আলোচনা করা হয়, সেসব আলোচনায় দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক বিষয়
স্থান পায় এর ফলে ছাত্রদের মাঝে এসব বিষয়ে সাম্যক ধারণা জন্মায়।
৩.
সংবাদপত্র: বর্তমান যুগে জনমত গঠনে সংবাদপত্রের
ভূমিকা অপরিসীম। সংবাদপত্রে দেশের বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে
আলোচনা হয়। তাছাড়া জনগণের বিভিন্ন ধরনের মতামত এখানে স্থান পায় ফলে জনগণের মতামতগুলো
সহজে সরকার জানতে পারে।
৪.
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম:
ফেসবুক, ইউটিউব, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে মতামত
প্রকাশ ও শেয়ার করতে পারে। এসব মাধ্যমে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা ও বিতর্কের মাধ্যমে
দ্রুত জনমত গঠিত হয়।
৫.
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা: ব্যক্তিগত
অভিজ্ঞতা জনমত গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মানুষ তাদের নিজস্ব অভিজ্ঞতার
উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন বিষয়ে তাদের মতামত গঠন করে। উদাহরণস্বরূপ, একজন ব্যক্তি যদি
একটি নির্দিষ্ট পণ্য ব্যবহার করে এবং সেটি পছন্দ করে, তাহলে সে সেই পণ্য সম্পর্কে ইতিবাচক
মতামত তৈরি করতে পারে।
৬.
রাজনৈতিক দল: রাজনৈতিক দল ও তাদের নেতারা প্রচারাভিযান,
সভা-সমাবেশ ও বক্তৃতার মাধ্যমে জনগণের মতামতকে প্রভাবিত করে। তাদের নীতিমালা ও কর্মসূচি
জনমত গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
৭.
সভা-সমাবেশ: বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক বা সাংস্কৃতিক
সভা-সমাবেশে আলোচিত বিষয়গুলো জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করে এবং মতামত গঠনে সহায়তা
করে।
৮.
ধর্মীয় সংঘ: জনমত গঠনে ধর্মীয় সংঘগুলো গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে। কেননা ধর্মীয় সংঘগুলোর আলোচনা ও উপদেশ জনগণকে অনেকটা প্রভাবিত করে
থাকে। এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীর মধ্যে জনমত গঠিত হয়।
উপসংহার: সুস্পষ্ট ও সঠিক জনমতই একটি গণতান্ত্রিক সমাজের মূল চালিকাশক্তি।
এটি গঠনে পরিবার, শিক্ষা, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভূমিকা অপরিসীম। তবে
ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তি যেন জনমতকে প্রভাবিত না করে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সঠিক
তথ্য ও ন্যায়ের পক্ষে জনমত গঠনের মাধ্যমে একটি সচেতন ও উন্নত সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।
12
সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবী শ্রেণী বলতে কি বুঝ?

Shihabur Rahman
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কি?

Shihabur Rahman
মরণশীলতা ও প্রজননশীলতা বলতে কি বুঝ?

Shihabur Rahman
উপনিবেশবাদ কি?

Shihabur Rahman
গ্রামীণ সমাজের / সম্প্রদায়ের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট ব্যাখ্যা কর।
