এথনিক সম্প্রদায়ের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ উল্লেখ কর।

Shihabur Rahman
এথনিক সম্প্রদায়ের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ
উল্লেখ কর।
ভূমিকাঃ এথনিক সম্প্রদায় (Ethnic Community) বলতে সাধারণত একটি নির্দিষ্ট
জনগোষ্ঠীকে বোঝানো হয়, যারা ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, ধর্ম, ইতিহাস এবং স্বাতন্ত্র্যসূচক
পরিচয়ের মাধ্যমে নিজেদের পৃথকভাবে চিহ্নিত করে। সাধারণত একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে
বা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে থাকলেও, তারা তাদের নিজস্ব পরিচয় এবং সংস্কৃতির প্রতি গভীরভাবে
সংযুক্ত থাকে। এই জনগোষ্ঠীগুলো পারস্পরিক সম্পর্ক, সামাজিক বন্ধন এবং ঐতিহ্যের ভিত্তিতে
গঠিত হয়।
এথনিক
সম্প্রদায়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য
১.
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও স্বকীয়তাঃ প্রত্যেক
এথনিক সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষা, পোশাক, খাদ্যাভ্যাস, ধর্মীয় বিশ্বাস, আচার-অনুষ্ঠান,
লোকগীতি, নৃত্য এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক উপাদান রয়েছে। এই সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলো
তাদেরকে অন্যান্য সম্প্রদায় থেকে আলাদা করে এবং নিজেদের পরিচয়কে সংরক্ষণে সহায়তা
করে।
২.
ভাষাগত অভিন্নতাঃ ভাষা হলো এথনিক
সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান পরিচয় সূচক। সাধারণত, নির্দিষ্ট এথনিক গোষ্ঠী নিজেদের
মধ্যে যোগাযোগের জন্য একটি নির্দিষ্ট ভাষা বা উপভাষা ব্যবহার করে। ভাষা শুধু তাদের যোগাযোগের মাধ্যম নয়, বরং এটি ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির
সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৩.
সাধারণ ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতাঃ এথনিক
সম্প্রদায়ের মানুষেরা সাধারণত ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতার একটি নির্দিষ্ট ধারাবাহিকতা বহন
করে। তাদের পূর্বপুরুষদের অভিজ্ঞতা, সংগ্রাম, বিজয় এবং সামাজিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে
তারা একত্রিত করে রাখে।
৪.
ধর্ম ও আধ্যাত্মিক বিশ্বাসঃ
ধর্ম অনেক ক্ষেত্রেই এথনিক সম্প্রদায়ের আত্মপরিচয়ের একটি বড় অংশ হিসেবে কাজ করে।
কিছু এথনিক গোষ্ঠী নির্দিষ্ট ধর্ম অনুসরণ করে এবং তাদের ধর্মীয় অনুশীলন তাদের সাংস্কৃতিক
ও সামাজিক জীবনের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত থাকে।
৫.
সামাজিক সংহতি ও দলগত সংযুক্তিঃ এথনিক
সম্প্রদায়ের সদস্যদের মধ্যে সাধারণত শক্তিশালী সামাজিক বন্ধন বিদ্যমান থাকে। পারস্পরিক
সাহায্য, সহযোগিতা এবং ঐক্যের ভিত্তিতে তারা নিজেদের সম্প্রদায়কে রক্ষা করে এবং একত্রে
বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করে।
৬.
ভৌগোলিক স্বাতন্ত্র্যঃ অনেক
এথনিক গোষ্ঠী নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলে বসবাস করে, যা তাদের স্বতন্ত্র পরিচয় গঠনে
সাহায্য করে। যদিও কিছু এথনিক সম্প্রদায় অভিবাসনের ফলে বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে,
তবুও তারা তাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করে।
৭.
জীবনধারা ও পেশাগত পার্থক্যঃ বিভিন্ন
এথনিক সম্প্রদায়ের নিজস্ব জীবনধারা ও পেশাগত বৈশিষ্ট্য থাকে। তাদের জীবনধারা কৃষি,
পশুপালন, হস্তশিল্প, ব্যবসা বা অন্যান্য পেশার ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকে। এই বৈচিত্র্য
তাদের স্বকীয়তা বজায় রাখে।
৮.
সামাজিক পরিচয় ও গোষ্ঠী সচেতনতাঃ এথনিক
সম্প্রদায়ের সদস্যরা নিজেদের গোষ্ঠীর প্রতি সাধারণত অত্যন্ত সচেতন এবং গর্বিত থাকে।
তারা নিজেদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে এবং অন্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে নিজেদের
পার্থক্যকে চিহ্নিত করতে সচেষ্ট থাকে।
উপসংহারঃ এথনিক সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি, ভাষা, ঐতিহ্য ও সামাজিক
সংহতির মাধ্যমে স্বতন্ত্রভাবে পরিচিত লাভ করে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বহু এথনিক গোষ্ঠী
বিদ্যমান, যারা তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এথনিক
সম্প্রদায়ের বৈচিত্র্য বৈশ্বিক সংস্কৃতিকে সমৃদ্ধ করে এবং মানবসভ্যতার বহুমাত্রিক
পরিচয়কে তুলে ধরে।
4
সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবী শ্রেণী বলতে কি বুঝ?

Shihabur Rahman
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কি?

Shihabur Rahman
মরণশীলতা ও প্রজননশীলতা বলতে কি বুঝ?

Shihabur Rahman
উপনিবেশবাদ কি?

Shihabur Rahman
গ্রামীণ সমাজের / সম্প্রদায়ের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট ব্যাখ্যা কর।
