ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষা বলতে কি বুঝ?

Shihabur Rahman
ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষা বলতে কি বুঝ?
ভূমিকা: ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষা সমাজে সাম্প্রদায়িক সুরক্ষা এবং শান্তিপূর্ণ
সহাবস্থান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটি এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা
যেখানে শিক্ষার্থীরা সকল ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা রাখে, কিন্তু কোন একটি নির্দিষ্ট
ধর্মকে অন্যান্য ধর্মের উপর প্রাধান্য দেয় না। এই শিক্ষা ব্যবস্থার মূল উদ্দেশ্য হলো
শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমান অধিকার, মানবিক মূল্যবোধ এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা প্রতিষ্ঠা
করা। এর মাধ্যমে একটি সুষম ও সহিষ্ণু সমাজের ভিত্তি গড়ে তোলা সম্ভব।
ধর্ম
নিরপেক্ষ শিক্ষা: ধর্ম নিরপেক্ষ
শিক্ষা হলো এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা, যা ধর্মীয় মতামত, বিশ্বাস বা প্রথার প্রতি পক্ষপাতিত্ব
বা বৈষম্য সৃষ্টি না করে, শিক্ষার্থীদের মানবিক গুণাবলী, যুক্তিবাদী চিন্তা এবং সমন্বিত
দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলার চেষ্টা করে। এটি ধর্মীয় স্বাধীনতা, সমতা এবং শ্রদ্ধাবোধের ভিত্তিতে
পরিচালিত হয়।
প্রামাণ্য
সংজ্ঞা: ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার বিষয়ে মনীষীগণ ভিন্ন ভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছেন যথা
নিম্নরূপ;
এমিলি
ডিকিনসন (Emily Dickinson): "ধর্ম নিরপেক্ষ
শিক্ষা শিক্ষার্থীদের তাদের বিশ্বে সমস্ত মানবিক মূল্যবোধ বুঝতে সাহায্য করে, যা তাদের
মধ্যে সহিষ্ণুতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা জন্মায়।"
ডঃ
আবদুল কালাম (Dr. A.P.J. Abdul Kalam): "ধর্ম
নিরপেক্ষ শিক্ষা সেই শিক্ষা, যা ধর্মের বাইরে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মানবিক গুণাবলী এবং
সার্বজনীন মূল্যবোধ শিখিয়ে তাদের সঠিক পথ নির্দেশ করে।"
এলেন
ডি. গিলিয়াম (Ellen D. Gilliam): "ধর্ম নিরপেক্ষ
শিক্ষা শিক্ষার্থীদের এমন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে, যেখানে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ভিন্নতা
সম্পর্কে সম্মান এবং সহিষ্ণুতা গড়ে ওঠে।"
ধর্ম
নিরপেক্ষ শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাঃ
ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষা দরকার কারণ এটি সমাজে সহিষ্ণুতা, শান্তি এবং সামাজিক সমতা প্রতিষ্ঠা
করতে সাহায্য করে। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভিন্ন ধর্ম, সংস্কৃতি এবং বিশ্বাসের প্রতি
শ্রদ্ধা এবং মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করে, যা সমাজে বৈষম্য এবং সহিংসতা কমানোর জন্য
গুরুত্বপূর্ণ। ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষা প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত
করে। শিক্ষার্থীদের নাগরিক দায়িত্ব, মানবাধিকার এবং অন্যের অধিকার সম্বন্ধে সচেতন করে
তোলে। এর মাধ্যমে সমাজে শৃঙ্খলা, সামাজিক সমতা এবং ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যা একটি
সুস্থ, শান্তিপূর্ণ এবং উন্নত সমাজ গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
পরিশেষে
পাওয়া যায়, ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষা শুধুমাত্র একটি
শিক্ষণ প্রক্রিয়া নয়, এটি একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা যা একে অপরের ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক
ও বিশ্বাসগত পার্থক্যকে সম্মান করার শিক্ষা দেয়। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ
সহাবস্থান এবং সামাজিক ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ধর্ম
নিরপেক্ষ শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি সম্মানজনক এবং সমৃদ্ধ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব
যেখানে সকল ধর্ম এবং বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা থাকবে।
4
সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবী শ্রেণী বলতে কি বুঝ?

Shihabur Rahman
চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত কি?

Shihabur Rahman
মরণশীলতা ও প্রজননশীলতা বলতে কি বুঝ?

Shihabur Rahman
উপনিবেশবাদ কি?

Shihabur Rahman
গ্রামীণ সমাজের / সম্প্রদায়ের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট ব্যাখ্যা কর।
