বাইনারি, অক্টাল ও হেক্সাডেসিমেল সংখ্যাকে ডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর
ডেসিমেল (Decimal) সংখ্যা পদ্ধতি হলো একটি ১০ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে, বাইনারি হলো ২ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি, অক্টাল হলো ৮ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি, এবং হেক্সাডেসিমেল হলো ১৬ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি। এই সংখ্যা পদ্ধতিগুলো থেকে ডেসিমেল পদ্ধতিতে রূপান্তর করা প্রয়োজন হতে পারে, বিশেষ করে কম্পিউটার সিস্টেমে কাজ করার সময়। এখানে আমরা দেখব কিভাবে বাইনারি, অক্টাল এবং হেক্সাডেসিমেল সংখ্যাকে ডেসিমেল পদ্ধতিতে রূপান্তর করা যায়।
১. বাইনারি সংখ্যাকে ডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর: বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি হলো ২ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি, যেখানে কেবলমাত্র দুটি সংখ্যা (০ এবং ১) ব্যবহৃত হয়। বাইনারি সংখ্যাকে ডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর করতে হলে, প্রতিটি বাইনারি ডিজিটকে তার অবস্থান অনুযায়ী ২-এর ঘাত দিয়ে গুণ করতে হয় এবং সবগুলো যোগ করতে হয়।
আরো পড়ুনঃ ইন্টারনেট অব থিংস (IoT) কী?
রূপান্তরের নিয়ম:
প্রতিটি ডিজিটকে (০ বা ১) ২-এর ঘাত দিয়ে গুণ করতে হবে। তারপর সমস্ত যোগফলকে একত্রিত করলে ডেসিমেল সংখ্যা পাওয়া যাবে।
উদাহরণ:
বাইনারি সংখ্যা: ১০১১
রূপান্তর প্রক্রিয়া:
১০১১ = (১ × ২³) + (০ × ২²) + (১ × ২¹) + (১ × ২⁰)
= (১ × ৮) + (০ × ৪) + (১ × ২) + (১ × ১)
= ৮ + ০ + ২ + ১ = ১১ (ডেসিমেল)
সুতরাং, বাইনারি সংখ্যা ১০১১ ডেসিমেল সংখ্যায় ১১।
আরও একটি উদাহরণ:
বাইনারি সংখ্যা: ১১০১০
রূপান্তর প্রক্রিয়া:
১১০১০ = (১ × ২⁴) + (১ × ২³) + (০ × ২²) + (১ × ২¹) + (০ × ২⁰)
= (১ × ১৬) + (১ × ৮) + (০ × ৪) + (১ × ২) + (০ × ১)
= ১৬ + ৮ + ০ + ২ + ০ = ২৬ (ডেসিমেল)
২. অক্টাল সংখ্যাকে ডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর: অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি হলো ৮ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি, যেখানে ০ থেকে ৭ পর্যন্ত সংখ্যা ব্যবহৃত হয়। অক্টাল সংখ্যাকে ডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর করতে হলে, প্রতিটি অক্টাল ডিজিটকে তার অবস্থান অনুযায়ী ৮-এর ঘাত দিয়ে গুণ করতে হয় এবং সবগুলো যোগ করতে হয়।
রূপান্তরের নিয়ম:
প্রতিটি ডিজিটকে ৮-এর ঘাত দিয়ে গুণ করতে হবে। তারপর সমস্ত যোগফলকে একত্রিত করলে ডেসিমেল সংখ্যা পাওয়া যাবে।
উদাহরণ:
অক্টাল সংখ্যা: ১৫৭
রূপান্তর প্রক্রিয়া:
১৫৭ = (১ × ৮²) + (৫ × ৮¹) + (৭ × ৮⁰)
= (১ × ৬৪) + (৫ × ৮) + (৭ × ১)
= ৬৪ + ৪০ + ৭ = ১১১ (ডেসিমেল)
আরও একটি উদাহরণ:
অক্টাল সংখ্যা: ২৩৪
রূপান্তর প্রক্রিয়া:
২৩৪ = (২ × ৮²) + (৩ × ৮¹) + (৪ × ৮⁰)
= (২ × ৬৪) + (৩ × ৮) + (৪ × ১)
= ১২৮ + ২৪ + ৪ = ১৫৬ (ডেসিমেল)
আরো পড়ুনঃ সুশীল সমাজ বলতে কি বুঝ?
৩. হেক্সাডেসিমেল সংখ্যাকে ডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর: হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা পদ্ধতি হলো ১৬ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি, যেখানে ০ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যা এবং A থেকে F পর্যন্ত বর্ণ ব্যবহৃত হয়। এখানে A = ১০, B = ১১, C = ১২, D = ১৩, E = ১৪, এবং F = ১৫। হেক্সাডেসিমেল সংখ্যাকে ডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর করতে হলে, প্রতিটি হেক্সাডেসিমেল ডিজিটকে তার অবস্থান অনুযায়ী ১৬-এর ঘাত দিয়ে গুণ করতে হয় এবং সবগুলো যোগ করতে হয়।
রূপান্তরের নিয়ম:
প্রতিটি ডিজিটকে ১৬-এর ঘাত দিয়ে গুণ করতে হবে। তারপর সমস্ত যোগফলকে একত্রিত করলে ডেসিমেল সংখ্যা পাওয়া যাবে।
উদাহরণ:
হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা: ৩A৭
রূপান্তর প্রক্রিয়া:
৩A৭ = (৩ × ১৬²) + (A × ১৬¹) + (৭ × ১৬⁰)
= (৩ × ২৫৬) + (১০ × ১৬) + (৭ × ১)
= ৭৬৮ + ১৬০ + ৭ = ৯৩৫ (ডেসিমেল)
আরও একটি উদাহরণ:
হেক্সাডেসিমেল সংখ্যা: ২F
রূপান্তর প্রক্রিয়া:
২F = (২ × ১৬¹) + (F × ১৬⁰)
= (২ × ১৬) + (১৫ × ১)
= ৩২ + ১৫ = ৪৭ (ডেসিমেল)
আরো পড়ুনঃ টেলি কনফারেন্স কি?
উপসংহার: ডেসিমেল সংখ্যায় রূপান্তর করার জন্য, বাইনারি, অক্টাল, এবং হেক্সাডেসিমেল পদ্ধতিতে প্রতিটি ডিজিটকে তার অবস্থানের ওপর নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট ভিত্তির (২, ৮, বা ১৬) ঘাত দিয়ে গুণ করতে হয় এবং সমস্ত মান যোগ করতে হয়। এই প্রক্রিয়াটি তুলনামূলকভাবে সহজ, তবে প্রতিটি ধাপ ধীরে ধীরে এবং সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হয়।